নিখিল ভারতের আন্দোলনের ফলে আসামের ভাষা শহীদদের সম্মানে কর্ণাটকে এবং ছত্তীশগড়ে বাংলা ভাষার অধিকার ছিনিয়ে নিল ভিটেহারা বাঙালিরা!
মাতৃভাষার অধিকার থেকে যারা বন্চিত, তাঁরা হিন্দীতে বললে,লিখলেই কুলাঙার- যারা হিন্দি সিনেমা, সিরিয়ালে গানের সঙ্গ যুক্ত তাঁরা কি? যারা স্বভাব ইংরেজ তাঁরা?
আমি চাই ভারতবর্ষের বাইশিটি রাজ্যের উদ্বাস্তু সন্তানদের মাতৃভাষার জন্য আমরণ লড়াই যার ফলে অন্ততঃ আমার মত কুলাঙার তাঁদের যাতে না হতে হয়।
পলাশ বিশ্বাস
ভারত ভাগের বলি বাঙালিরা কতটা বাঙালি,তা আমার জানার কথা নয়।দেশ ভাগ তাঁদের শুধু ভিটেছাডা়,দেশ ছাড়া,নাগরিকত্ব ছাড়া করেনি,তাঁদের বাঙালিত্বও ছিনিয়ে নিতেও তেমন কসুর করেনি।দেশভাগের ফলে প্রথমতঃ পূব বাংলা থেকে উত্খাত হওয়ার পর পরই পশ্চিম বঙ্গ থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর ভিটে মাটি নাগরিকত্ব,পরিচয়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের মাতৃভাষা আ মরি বাংলাভাষার অধিকারও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।যদিও তাঁরা আসামে এবং ত্রিপুরায় প্রথম থেকেই মাতৃভাষায় লেখাপড়া করার অধিকার পেয়েছে।ত্রিপুরায় তাঁরা বহুসংখ্য কিন্তু আসামে মাতৃভাষার অধিকারের জন্য রাজপথে রাঙিয়ে যে বাঙালিরা বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের চাইতে কোনো অংশে কিছু কম মাতৃভাষা প্রেম প্রমাণিত করন নি,সেই আসামে এবং ত্রিপুরায় বাংলা ভাষা চর্চার কতটা স্বীকৃতি পশ্চিম বঙ্গ অথবা বাংলাভাষা দিয়ে থাকে,তার উল্লেখ না করেই বলতে পারি,বাংলাভাগের অনেক আগে থাকতেই সংযুক্ত বিহারে রাতিমত বাংলাভাষার চর্চা ছিল।শুধু তাই নয়,শরত্ চন্দ্র, বিভুতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়, বিধান রায়, সুবোধ রায়, বনফূলসহ অনেক বরেণ্য বাঙালিরা বিহার থেকেই বাংলা সাহিত্যে,বাংলা সংস্কৃতিতে এবং বাংলার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছেন।সে সুযোগ বাংলার ইতিহাস ভূগোল থেকে বহিস্কৃত উদ্বাস্তু বাঙালিদের নেই।
বাংলার বাইরের বাঙালিদের বাঙালিত্ব বোঝাতে গেলে একটি উদাহরণই বোধ হয় যথেষ্ট, বিধান রায় বিহার থেকে বাংলায় এসে বাংলার যশশ্বী মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন,অথচ দন্ডকারণ্য থেকে বাংলা মায়ের ডাক শুনে পশ্চিমবঙ্গে এসে সুন্দরবনের মরিচঝাঁপিতে তাঁদের উদ্বাস্তু বাঙালিদের বাঙালি আধিপাত্যবাদের বলি হতে হল গুলি খেয়ে,বাঘের খাদ্য হয়ে।সেই গণসংহারের আঝ অবধি কোনো তদন্ত হয় নি।বিচারের বাণী নিভৃতে শুধু কাঁদে।
শিশুদের পানীয় জলে এই বাঙালিত্বের শাসকেরা সেদিন বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল।
তাঁদের মৃতদেহ বাদাবনের নদীবক্ষে ভাসিয়ে বাঘ ও কুমিরের খাদ্যে পরিণত করেছিল।
নন্দীগ্রাম অথবা সিঙ্গুর অথবা জঙ্গলমহলের অনেক আগে হার্মাদবাহিনী সেই গণ সংহারের বোধন উত্সবে উদ্বাস্তু মায়েদের ঠিক তেমন করেই আবার ধর্ষিতা করে দিয়েছিল,বেইজ্জত করেছিল.যেমনটা দেশভাগের আগে ও পরে সীমান্তের ওপারে হতে হয়েছিল এবং হতে হয়।যার কোনো প্রতিকার .বিচটার কোনোদিন হয়নি,হয়না।
বাঙালি উদ্বাস্তুদের নিয়তি বিপর্যয়ের আরেকটি উদাহরণ দিতেই হয়,ভারত ভাগের বলি হয়ে জেনারেল মুশার্রফ যেমন নয়া দিল্লী থেকে মুহাজির পরিচয় বহন করে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন,তেমনিই কোনো এক ডঃ মনমোহনসিং ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন পাকিস্তান থেকে আগত শরণার্থী পরিবারের সন্তান হয়েও।কোনো এক লালকৃষ্ণ আদবাণী ভারতের উপ প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন এবং এখনো তিনি ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি হলেও হতে পারেন।
অথচ বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাইরে ভারতবর্ষের মোট বাইশটি রাজ্যে আসাম এব ত্রিপুরা বাদে কোথাও এই উদ্বাস্তু বাঙালিদের একজন এমএলএ বা একজন এমপি হয় না।জনসংখ্যা অনুপাতে তাঁদের কোনো রাজনৈতিক প্রতিনিধিতত্ব যেমন পশ্চিম বঙ্গে নেই তেমনি সারা ভারতে তাঁদের ভোটে তাঁদের কোনো জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হয় না।
দন্ডকারণ্যে এবং উত্তরাখন্ডের একটি দুটি সীটে তাঁরা যখন একতাবদ্ধ হয়ে নিজেদের এমএলএ নির্বাচিত করতে পারলেন ,তখন সেই সীটগুলিতে বাঙালি ভোট ভাগ করে দেওয়া হল নূতন বিন্যাসে।উড়াষ্যার মালকানগিরি ও ছত্তিশগড়ের পাখানজোড়ে আশি শতাংশ বাঙালি ভোট থাকা সত্বেও সেই সীটগুলি আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত করা হল উদ্বাস্তু বাঙালিদের বিধানসভায় ঢোকা নিষিদ্ধ করতে।
বলা বাহুল্য,আসাম,ত্রিপুরা এবং উড়ীষ্যা ছাড়া বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বাইরে বাঙালি উদ্বাস্তুদের বাংলায় লেখা পড়ার সুযোগ ছিল না বা নেই।আসামে কাছাড়ের ভাষা শহীদদের মাতৃভাষা আন্দোলনের ফলে বাংলা ভাষার অধিকার স্বীকৃত হয়।কিন্তু ত্রিপুরা,উড়ীষ্যা ছাড়া অন্য কোথাও সেই অধিকার বাঙালি উদ্বাস্তুদের নেই।কিন্তু মাতৃভাষার দাবি নিয়ে তাঁদের আন্দোলন কোনো দিনও থামেনি।কিন্তু সেই দাবি আদায়ের সাগঠনিক ক্ষমতা উদ্বাস্তুদের হয়নি।
এখন হয়েছে।ইতিমধ্যে নিখিল ভারত উদ্বাস্তু সমন্বয় সমিতির আন্দোলনে বাইশটি রাজ্যে বাঙালি উদ্বাস্তুরা সংগঠিত হয়েছে।তাই কর্নাটকে রক্ত না ঝরিয়েও বাংলা এখন দ্বিতীয রাজভাষা।ছত্তিশগড়ের পাখানজোড়ে নিখিল ভারতের নেতৃত্বে লাখোলাখ উদ্বাস্তু বাঙালিদের আন্দোলন এবং আমরণ অনশনের ফলে আগামী সেশান থেকে বাংলা পড়ার অধিকার মিলছে।তাঁরা এখন অন্যান্য অধিকারও আদায় করে নেবে,আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
বাংলায় বা বাংলাদেশে ঔ ভিটেছাড়া বাঙালিরা এসে যখন তাঁদের রক্তে মেশা বাংলা ভাষায় কথা বলেন,তখন তাঁদের ভিন রাজ্যের ভিন ভাষার টান নিয়ে সমালোচনা হয়। প্রথাগত শিক্ষা না থাকার ফলে নিজের রাজ্যে বাংলা ভাষা চর্চা করলেও সেই বাংলার স্বীকৃতি বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ দেয় নি।এমনকি আসাম এবং ত্রিপুরার বাংলাভাষা চর্চা সম্পর্কে বাংলাদেশ বা পশ্চিমবঙ্গে আজ অবধি কোনো গবেষণার কথা আমার জানা নেই।
আমরা বিভিন্ন রাজ্যে ভিন ভিন ভাষার মাধ্যমে পড়াশুনা করেছি।হিন্দি ও ইংরেজি মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি।যে বিহারের, ঝাড়খন্ডের অবদান বাংলা সাহিত্যে সব চেয়ে বেশি স্বীকৃত, সেখানেও উদ্বাস্তু ছেলেমেযেদের বাংলা শেখার সুযোগ নেই।আজ পশ্চিম বঙ্গেও চাকরি ও জীবিকার প্রয়োজনে মাতৃভাষা ছেড়ে ইংরেজি ও হিন্দী মাধ্যমে পড়াশুনা কম হচ্ছে না।কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছায মাতৃভাষা ববহলা ও অসম্মান মেধা বিকাশের পরিচয়,অথচ বাংলার বাইরে মাতৃভাষার অধিকার থেকে বন্চিত মানুষরা যে ভাষা জানেন,সেই ভাষায় কথা বললে বা লিখলেই মাতৃভাষার অবহেলা ও অসম্মান ঘটে। দেশভাগের দায়ী যারা ,তাঁরাই বাঙালিত্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান,অথচ দেশ ভাগের বলি যারা,দেশভাগের ফলে তাঁদের এই ভাষা বিপর্যয়ের দজন্য তাঁরাই কুলাঙার।আমদার বাংলা লেখার সুযোগ হযনি,তাই বলে কি নিজেদের কথা অন্য ভাষায় বলা বা লেখা আমদাদের অপরাধ,তাহলে সেই অপরাধকর্মই আমার জীবন ও জীবিকা।
আমরা বাংলা ভাষায় লেখা পড়ার সুযোগ পাইনি।যে রাজ্যে আমাদের জন্ম সেই রাজ্যের ভাষা আমাদের শিখতে হয়েছে এবং জীবনজীবিকার যাবতীয সমস্যা নিয়ে সেই সব ভাষায় কথা বলতে হয়েছে,লিখতে হয়েছে,কিন্তু আমরা মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা যেমন করিনি, অবহেলাও তেমনি করিনি।
বাইশটি রাজ্যের সবকটি বাঙালি উপনিবেশে কম বেশি বাংলা চর্চা প্রথাগত শিক্ষা ছাড়া ভারত ভাগের পর থেকেই চলছে এবং সেখানে যারা থাকেন তাঁরা বাংলা ভাষা এবং বাংলা সংস্কৃতি ভোলেননি।জাত পাঁতে বা ধর্মে নয়,বাঙালিত্বেই তাঁদের পরিচয়।যদি বাঙালিত্বর শিকড় কোথাও খুঁজতে হয,তা আছে এই সমস্ত ভিটেহারা মানুষদের জীবনে, জীবিকায়, জীবন যন্ত্রণায়।তাঁদের মধ্যে একবার কষ্ট করে গিয়ে দেখতে পারেন।
প্রথাগত শিক্ষা না থাকার ফলে মাইকেল মধুসূদন দত্ত.ড.অশোক মিত্র বা নীরদ সি চৌধুরির সমকক্ষ হয়ে অন্নান্য ভাষায় শিক্ষা সত্বেও বাংলায় লিখে সাডা় ফলার ক্ষমতা বা প্রতিভা আমাদের নেই।অন্ততঃ আমার নেই।আমি মাইকেলের মত রাতারাতি ইতিহাশ ভাঙা ভাষায়.ছন্দে ,ভঙ্গিমায় কোনো কাল লিখতে পারব না।এখন সে সুযোগ যেমন নেই,সময়ও আমার নেই।আমাকে জীবিকার প্রয়োজনে নিযমিত হিন্দী ও ইংরেজিতে লিখতেই হবে।শখের বাংলা লেখার সুযোগ ও সময় আমার নেই।আমি যা পারি তাই দিয়েই আমি আমারা মানুষদের জন্য আমৃত্যু লড়ে যাব।যে কোনো ভাষাই আমার মাতৃভাষা,সব ভাষাকেই আমি সম্মান করি এবং সব ভাষাতেই আমি লেখা পড়া করতে চাই,যদিও সেই মেধা,শিক্ষা,দক্ষতা বা ক্ষমতা কোনটাই আমার নেই ।তবু আমি যেমন করেই পারব,সবাই আমার সঙ্গে বিচ্ছেদ করলেও আমি আমার মানুষদের কথা বলা,লেখা বন্ধ করছি না।
তাছাড়া,সারা পৃথীবীর বাঙালিদের সঙ্গে নাড়ীর টান থাকলেও সারা ভারতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা,এমনকি এই পশ্চিম বঙ্গেও খালধারে বিলধারে রেলধারে বাদাবনে বসতি করে থাকা পূব বাংলার ভিটেহারা ভারতভাগের বলি,পোকা মাকড়ের মত বেঁচে থাকতে বাধ্য মানুষদের জীবন যন্ত্রণার কোনো খবর বাংলা কাগজে হয় না,জীবনের কোনো ক্ষেত্রেই তাঁদের প্রতিনিধিত্ব নেই এমনকি রাজনীতিতেও নেই।
ইদানীং যুগশঙ্খে নিযমিত বাংলা ও বাংলার বাইরের ভিটেহারা আখ্যান প্রকাশিত হচ্ছে।অন্যত্র কোথাও নয়।
আমি একজন সাংবাদিক।নৈনীতালে আমার জন্ম।আমি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের মত কাগজে পচিঁশ বছর সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করেছি।বলা বাহুল্য,সারা ভারতের উদ্বাস্তু সন্তানদের মত বাংলা ভাষায় আমার প্রথাগত শিক্ষা বা দক্ষতা কোনটাই নেই।সেই অর্থে আমার মত অতি সাধারণ মেধার মানুষের পক্ষে বাংলায় পচিঁশ বছর বসবাসা করার পরও বাংলা পড়ার যথেষ্ট সুযোগ থাকা সত্বেও বাংলায় লেখার কোনো সুযোগ আদৌ হয়নি।
আমি হাইস্কুল পর্যন্ত হিন্দী ও তারপর ইংরেজী মাধ্যমে পড়াশুনা করেছে।1973 সাল থেকে আমি সংবাদপত্রে নিযমিত লিখে চলেছি হিন্দিতে এবং ইংলিশে।
আমার হিন্দী ও ইংলিশে লেখা সিংহভাগ লেখাই উদ্বাস্তু সমাজ নিযে,যা বাংলা সাহিত্যে ,সিনেমায় বা সাংবাদিকতায় রীতিমত নিষিদ্ধ বিষয়।এই অপরাধে ঋত্বিক ঘটকের মত অসামান্য একজন মানুষ বাংলা থেকে বিতাড়িত।উদ্বাস্তুদের জীবন,জীবিকা,সংস্কৃতি, ইতিহাস নিয়ে।বিভিন্ন রাজ্যে তাঁদের সমস্যা ও তাঁদের আন্দোলন নিয়ে।যেমনটা লেখার কোনো সুযোগ আমরা মাতৃভাষা বাংলায় আমি পাইনি।আজ অবধি পাইনি।লিটিল ম্যাগেও নয়।তাহলে যারাআমার লেখা পড়ে,যে ভাষায় পড়ে ,তাঁদের সঙ্গে সেই ভাষায় যোগাযোগ বন্ধ করা আমার পক্ষে একেবারই সম্ভব নয়।
অন্য ভাবে বললে বলতে হয়,হিন্দী বা ইংরেজিতে না লিখলে আমার মানুষদের জীবন যন্ত্রণা নিয়ে কোথাও কিছু লেখা অন্ততঃ আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না।এখনো সম্ভব নয়।
তাছাড়া,হিন্দী ও ইংরেজি জানার জন্য আমি চত্রিশ বছর বিভিন্ন প্রথম শ্রেণীর কাগ্জে সারা ভারতবর্ষে কাজ করেছি এবং সারা ভারতবর্ষে আমার সেই পরিচিতি আছে।উপরন্তু সাংবাদিকতা আজও আমরা জীবিকা।
বাংলা ভাষায় সংবাদিকতায় আমার জীবিকার কোনো সুযোগ নেই। আমি যদি হিন্দীতে লেখা বন্ধ করি,তাহলে আমাকে আমার জীবিকা থেকে বন্চিত হতে হয় এবং উদ্বাস্তুদের জন্য আমি যে দীর্ঘ তেতাল্লিশ বছর লাগাতার লিখথে আসছি, তাও বন্ধ করতে হয়।বাংলা ভাষা তেমন না জনতে পারি,যে ভাষায় আমার লেখা নিয়মতি দৈনিক সংবাদপত্রে এবং সাহিত্যপত্রিকাতেও সারা দেশে প্রকাশিত হয়,সে ভাষায় লেখা বন্ধ করলে আমি আমার মানুষদের ব্যথা কথা সর্বসমক্ষে কিভাবে তুলব,আমি জানিনা।
হিন্দিতে লিখলে দোষ,কিন্তু যারা ইংরেজিতে লেখেন,তাঁরা কি ধোয়া তুলসী পাতা?
হিন্দিতে সাহিত্যচর্চা বা সাংবাদিকতা দোষের,কিন্তি যারা সারা জীবন হিন্দি সিনেমায় কাজ করেন এবং বাংলা বলেনও না,তাঁরাই আবার বাঙালি সংস্কৃতির গৌরব,হিন্দি সিনেমা ও হিন্দী সীরিয়াল বা হিন্দী গান আমাদের প্রাণ,অথচ হিন্দিতে লিখলেই কুলাঙার?
আমিও মনে করি ,সত্যি সত্যিই আমি কুলাঙার যেহেতু আমি ঔ রকম বিশুদ্ধ ঝরঝরে বাংলা লিখতে পারিনা,যেমনটা পশ্চিম বঙ্গ বা বাংলাদেশের বাঙালিরা পারেন।
আমি চাই ভারতবর্ষের বাইশিটি রাজ্যের উদ্বাস্তু সন্তানদের মাতৃভাষার জন্য আমরণ লড়াই যার ফলে অন্ততঃ আমার মত কুলাঙার তাঁদের যাতে না হতে হয়।
No comments:
Post a Comment