Tuesday, January 26, 2016

বাঙলাদেশ লেখক শিবির, ঢাকা নগর শাখা আয়োজিত আলোচনা সভা। ১৯৩২ সালের আগস্টে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রদায়িক রোয়েদাদ ঘোষণা করেন। এতে উচ্চ বর্ণের হিন্দু জনগোষ্ঠীর বাইরে 'অনুন্নত' হিসেবে পরিচিত জনগোষ্ঠীর জন্য আইন সভায় পৃথক প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা রাখা হয়। এর ফলে আইন সভায় উচ্চ বর্ণের শিক্ষিত ও সুবিধাভোগী প্রভাবশালী হিন্দুগণ সংখ্যালঘিষ্ঠ হয়ে পড়ার আশঙ্কায় এই রোয়েদাদের বিরোধিতা করেন এবং তাদের অধিক সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবির পক্ষে যুক্তি হিসেবে হিন্দুদের 'সাংস্কৃতিক শ্রেষ্ঠত্বে'র যুক্তি উপস্থাপন করেন। কিন্তু নিম্নবর্ণের হিন্দু, অচ্ছুত, তফসিলি সম্প্রদায় সহ বহু জনগোষ্ঠী ছিল যারা বর্ণহিন্দু-কথিত ভারতবর্ষে 'শ্রেষ্ঠ সংস্কৃতি'র প্রতিনিধিত্বকারী ছিল না। কাজেই মুসলমানদের পাশাপাশি নিম্নবর্ণের তফসিলি সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক প্রতিনিধিত্বের দাবি উত্থাপিত হলে উচ্চ বর্ণের হিন্দুগণ এর বিরোধিতা করতে থাকেন এবং এ কাজে নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসেন তাদের স্বার্থের সর্বোচ্চ প্রতিনিধিত্বকারী মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। এই রোয়েদাদের ফলে গান্ধী যে গোষ্ঠীর স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করতেন তাদের প্রভাব খর্ব হওয়ার আশঙ্কায় আমরণ অনশন করতে শুরু করেন তিনি। অন্যদিকে সমাজের নিম্নবর্গ থেকে উঠে আসা মাহার সম্প্রদায়ের নেতা (পরবর্তীতে ভারতের সংবিধান-প্রণেতা) ড. ভিমরাও রামজী আম্বেদকর ছিলেন সংসদে মুসলমানদের পাশাপাশি নিম্নবর্ণীয় হিন্দু ও তফসিলি সম্প্রদায়ের পৃথক নির্বাচনের পক্ষে। তিনি জানতেন, নিম্নবর্ণের জনগোষ্ঠীর জন্য স্বতন্ত্র ব্যবস্থা না থাকলে তাদের স্বার্থ উচ্চবর্ণীয় হিন্দু 'ভদ্রলোক'দের স্বার্থের অধীন হবে এবং নিজেদের বিদ্যমান অবস্থার কোনো উন্নতি ঘটবে না। কিন্তু গান্ধীর অনশনের পাশাপাশি সংসদে নিম্নবর্ণের প্রতিনিধি এম সি রাজা পৃথক নির্বাচনের পরিবর্তে সংরক্ষিত আসনের ভিত্তিতে যুক্ত নির্বাচনের পক্ষ অবলম্বন করে উচ্চবর্ণের স্বার্থের কাছে আত্মসমর্পণ করলে পৃথক নির্বাচন দাবির অবস্থান থেকে সরে আসা ছাড়া আম্বেদকরের আর কোনো পথ রইল না, যদিও এর আগে নিজের অবস্থানের সপক্ষে যথেষ্ট যুক্তি প্রদর্শন করে তিনি তার বক্তব্য প্রদান অব্যাহত রেখেছিলেন। কিন্তু এম সি রাজার আত্মসমর্পণ এবং গান্ধীর অনশনের ফলে তার স্বাস্থ্যের অবনতিজনিত কারণে আম্বেদকর শেষ পর্যন্ত বাধ্য হলেন যু্ক্ত নির্বাচনের দাবি মেনে নিতে এবং ২৪ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষর করলেন পুনে চুক্তি। ১৯৩২ সালের সাম্প্রদায়িক রোয়েদাদ, পৃথক নির্বাচন ঘোষণা, গান্ধীর অনশন, এম সি রাজার আত্মসমর্পণ প্রভৃতি প্রেক্ষাপটে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক পুনে চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবেন বাঙলাদেশ লেখক শিবির, ঢাকা নগর শাখার সদস্য উৎপল বিশ্বাস। আলোচনা সভায় অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছ

   
Utpal Biswas
January 27 at 11:36am
 
... আবিদুল ইসলাম 25 January at 11:00 · Dhaka · বাঙলাদেশ লেখক শিবির, ঢাকা নগর শাখা আয়োজিত আলোচনা সভা। ১৯৩২ সালের আগস্টে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রদায়িক রোয়েদাদ ঘোষণা করেন। এতে উচ্চ বর্ণের হিন্দু জনগোষ্ঠীর বাইরে 'অনুন্নত' হিসেবে পরিচিত জনগোষ্ঠীর জন্য আইন সভায় পৃথক প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা রাখা হয়। এর ফলে আইন সভায় উচ্চ বর্ণের শিক্ষিত ও সুবিধাভোগী প্রভাবশালী হিন্দুগণ সংখ্যালঘিষ্ঠ হয়ে পড়ার আশঙ্কায় এই রোয়েদাদের বিরোধিতা করেন এবং তাদের অধিক সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবির পক্ষে যুক্তি হিসেবে হিন্দুদের 'সাংস্কৃতিক শ্রেষ্ঠত্বে'র যুক্তি উপস্থাপন করেন। কিন্তু নিম্নবর্ণের হিন্দু, অচ্ছুত, তফসিলি সম্প্রদায় সহ বহু জনগোষ্ঠী ছিল যারা বর্ণহিন্দু-কথিত ভারতবর্ষে 'শ্রেষ্ঠ সংস্কৃতি'র প্রতিনিধিত্বকারী ছিল না। কাজেই মুসলমানদের পাশাপাশি নিম্নবর্ণের তফসিলি সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক প্রতিনিধিত্বের দাবি উত্থাপিত হলে উচ্চ বর্ণের হিন্দুগণ এর বিরোধিতা করতে থাকেন এবং এ কাজে নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসেন তাদের স্বার্থের সর্বোচ্চ প্রতিনিধিত্বকারী মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। এই রোয়েদাদের ফলে গান্ধী যে গোষ্ঠীর স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করতেন তাদের প্রভাব খর্ব হওয়ার আশঙ্কায় আমরণ অনশন করতে শুরু করেন তিনি। অন্যদিকে সমাজের নিম্নবর্গ থেকে উঠে আসা মাহার সম্প্রদায়ের নেতা (পরবর্তীতে ভারতের সংবিধান-প্রণেতা) ড. ভিমরাও রামজী আম্বেদকর ছিলেন সংসদে মুসলমানদের পাশাপাশি নিম্নবর্ণীয় হিন্দু ও তফসিলি সম্প্রদায়ের পৃথক নির্বাচনের পক্ষে। তিনি জানতেন, নিম্নবর্ণের জনগোষ্ঠীর জন্য স্বতন্ত্র ব্যবস্থা না থাকলে তাদের স্বার্থ উচ্চবর্ণীয় হিন্দু 'ভদ্রলোক'দের স্বার্থের অধীন হবে এবং নিজেদের বিদ্যমান অবস্থার কোনো উন্নতি ঘটবে না। কিন্তু গান্ধীর অনশনের পাশাপাশি সংসদে নিম্নবর্ণের প্রতিনিধি এম সি রাজা পৃথক নির্বাচনের পরিবর্তে সংরক্ষিত আসনের ভিত্তিতে যুক্ত নির্বাচনের পক্ষ অবলম্বন করে উচ্চবর্ণের স্বার্থের কাছে আত্মসমর্পণ করলে পৃথক নির্বাচন দাবির অবস্থান থেকে সরে আসা ছাড়া আম্বেদকরের আর কোনো পথ রইল না, যদিও এর আগে নিজের অবস্থানের সপক্ষে যথেষ্ট যুক্তি প্রদর্শন করে তিনি তার বক্তব্য প্রদান অব্যাহত রেখেছিলেন। কিন্তু এম সি রাজার আত্মসমর্পণ এবং গান্ধীর অনশনের ফলে তার স্বাস্থ্যের অবনতিজনিত কারণে আম্বেদকর শেষ পর্যন্ত বাধ্য হলেন যু্ক্ত নির্বাচনের দাবি মেনে নিতে এবং ২৪ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষর করলেন পুনে চুক্তি। ১৯৩২ সালের সাম্প্রদায়িক রোয়েদাদ, পৃথক নির্বাচন ঘোষণা, গান্ধীর অনশন, এম সি রাজার আত্মসমর্পণ প্রভৃতি প্রেক্ষাপটে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক পুনে চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবেন বাঙলাদেশ লেখক শিবির, ঢাকা নগর শাখার সদস্য উৎপল বিশ্বাস। আলোচনা সভায় অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছ

No comments:

Post a Comment