আজ যাদবপুরের মিছিল প্রসঙ্গে কতকগুলো কথা মনে হচ্ছিল। এক বন্ধু জানালেন মিডিয়া ভয়ঙ্করভাবে যাদবপুরের মিছিলকে 'দেশদ্রোহী' প্রমানে ব্যস্ত। তাতে নাকি আফজল গুরুকে 'শহীদ' আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ভালো করে দেখলাম সবটা, যাই হোক...
কোন রাজনৈতিক কর্মসূচির অংশ হিসাবে আমরা যখন শ্লোগান দি, তখন আমরা সমাজের আর পাঁচটা মানুষকে কিছু communicate করতে চাই। ফলত আমাদেরই দায় থাকে যথা সম্ভব সহজে নিজেদের বক্তব্যকে খুব দ্রুততার মধ্যে, সেই সব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যারা সরাসরিভাবে কর্মসূচিটির সাথে যুক্ত নন। এটা একটি রাজনৈতিক প্রচেষ্টার বিষয় যাতে অনেকটা দায় নিতে হয় বলেই ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়। কোন যৌথ মিছিলে নিজেদের রাজনৈতিক লাইন অনুসারে শ্লোগান দেওয়া, আন্দোলনের প্রতি দায়বদ্ধতা অনুভব না করা, কিছু বিপ্লবীদের বেশ পুরানো সংস্কৃতি, বহু সময়েই আন্দোলনকে তা ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত করে, প্রচুর মানুষকে সামনে দেখে নিজের রাজনৈতিক লাইনটুকু আউরে ফেললে সম্ভবত সেটা অনেক মানুষের রাজনীতি হয়ে পড়ে না, পাশের মানুষগুলো থেকে বিচ্ছিন্নতাও কাটে না। দুঃখজনক এটাই এই সংস্কৃতিটা আজ অবধি তাঁরা ছাড়তে পারলেন না, ভবিষ্যতেও বোধহয়...
কিন্তু একটা বড় মুস্কিল হল, মিছিলে এমন কিছু শ্লোগান ওঠেনি যার দায় ঝেড়ে ফেলতে হবে, গিলানি কে সুপ্রিম কোর্ট বেকসুর খালাস দিয়েছে, ইন্দিরা জয়সিং বা রাম জেঠ মালানির মত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা আফজলের ফাঁসির আদেশ ও তার পদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন তুলেছেন, শেষোক্তজন বিজেপির নেতা ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আফজল গুরুকে অত্যন্ত অন্যায়ভাবে প্রায় কিছু সাক্ষ্য প্রমান ছাড়াই সর্বোচ্চ আদালত 'the collective conscience of the society' এর অজুহাতে ফাঁসি দিয়েছে। কাশ্মীরের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের আশা আকাঙ্খাও কি অন্যায়? মোহন ভাগবত আর আফজল গুরু একই আসনে বসবে(একজন 'র্যাশনাল মানুষ' এই পোস্ট দিতে পারে তো আর এস এস এর ক্যাডাররা কি দোষ করল)? মিডিয়া আফজল গুরুকে 'মুসলিম সন্ত্রাসবাদী' প্রমান করতে চায়, সেটা আমায় মেনে নিতে হবে সমাজের মতামতটা উলটোদিকে বলে? কিসের বিরুদ্ধে যে লড়ছি কে জানে?
পুঁজির বিরুদ্ধে 'ইসলামী সন্ত্রাসবাদ'কে 'প্রতিস্পর্ধা' মনে করা যতটা 'রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা' তার কাছাকাছি দেউলিয়াপনা 'আফজল গুরু' কে ইসলামী 'সন্ত্রাসবাদি'দের
সাথে এক করে ফেলা। অথবা জাতিসমুহের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে রাষ্ট্রীয় 'বিচ্ছিন্নতাবাদী' তকমায় ভূষিত করার নিরবিচ্ছিন্ন প্রচারের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান না রাখা।
সাথে এক করে ফেলা। অথবা জাতিসমুহের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে রাষ্ট্রীয় 'বিচ্ছিন্নতাবাদী' তকমায় ভূষিত করার নিরবিচ্ছিন্ন প্রচারের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান না রাখা।
অনেক দূর থেকে কিছু লিখিত আর ভিডিও ডকুমেন্ট দেখেই এই মতটা রাখলাম। এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে কিছু লোকের রাজনীতির নিঃসন্দেহে সমস্যা আছে, কিন্তু কিছু লোকের মাথা খারাপ হয়ে গ্যাছে বলে আমার ধারণা।
No comments:
Post a Comment