ঘুষপেঠিয়া অজুহাতে হ্যলেঞ্চা ১৩ জন ছাএকে পুলিশের হাতে গ্রেফ্তার, নিখিল বারতের উদ্যোগে মুক্ত।
বাংলা ভারতভাগের বলি উদ্বাস্তুদের জন্য যন্ত্রণা শিবির ডিটেনশান ক্যাম্প হয়ে গিয়েছে।
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বলে থাকেন যে বাংলায় কোনো বাংলাদেশি ঘুসপেঠিয়া নেি,কিন্তু তাঁর পুলিশ ও প্রশাসন রজই কোথাও ন কোথাও ওপার বাংলার মানুষদের ঘুসপেঠিয়া বলে গ্রেফতার করছেন কেন্দ্র সরকারের নিষেধাকজ্ঞা সত্বেও।
পলাশ বিশ্বাস
আমি বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছি,ভারতভাগের বলি বাঙালি হি্নদু উদ্বাস্তুদের জন্য সারা ভারতে সবচেয়ে শত্রুতা করছে বাংলার শাসক শ্রেণী।সেই ভারতভাগের আগে থেকেই প্রজা কৃষক পার্টির ভূসংস্কার এজেন্ডা নিয়ে সরকার গঠনের সময় থেকে বাংলার জমিদার শ্রেণী পূর্ব বাংলার মানুষকে শেষ করার জন্য যা যা করার প্রয়োজন,তা করতে কখনো পিছপা হয়নি।ভারতভাগ তারই পরিণতি।
ভারতভাগের বলি ওপার বাংলার মানুষদের জন্য পশ্চিম বঙ্গে জায়গা হয়নি,তাঁদের সারা ভারতে ছড়িয়ে ঢিটিয়ে দিয়ে তাঁদের রাজনৈতিক পরতিনিধিত্বের দফা রফা করা হল।
শুধু তাই নয়,মূলতঃ কৃষি জীবিকার সঙ্গে যুক্ত এই সব মানুষদের বাংলার ভূগোল ইতিহাস থকে চিরতরে নির্বাসিত করা হল।
ওপার বাংলায় যারা থেকে গেলেন,এপার বাংলা তাঁদের কথা ভাবল না কোনো দিন এবং যারা এসেছেন এপার বাংলায় পত্রপাঠ তাঁদের বিদায় করা হল।
ফিরে যারা আসার চেষ্টা করলেন,তাঁদের মরিচঝাঁপি গণ সংহার গণধর্ষনে বুঝিয়ে দেওয়া হল এই বাংলায় তাঁদের ঠাঁই নাই।
যারা তবু থেকে গেলেন তাঁদের পুনর্বাসনের নামে বসত পাট্টা দায়সারা ভাবে দেওয়া হল,কিন্তু নাগরিকত্ব ভারতে বর্ষে 2003 সাল পর্যন্ত জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব থাকা সত্বেও দেওয়া হল না।বাংলা উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের দাবি কখনো করেনি যেমনটা পান্জাব করেছে,এবং পান্জাবি বা সিন্ধিদের নাগরিকত্ব নিয়ে কোনো দিন কোনো প্রশ্ন ওঠেনি।
ভারতবর্ষের সীমান্তে ঢকার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের পুনর্বাসন,নাগরিকত্ব ও সংরক্ষণ,ক্ষতিপূরণ সবকিছু হল।আজও যারা পাকিস্তান থেকে আসছেন তাঁদের নাগরিকত্বে আইনী কোনো বাধা নেই।অথচভারতভাগের পর পর ওপার বাংলা থেকে যারা এসেছেন তাঁর নাগরিত্বের, মাতৃভাষার,সংরক্ষণের,জীবন জীবিকার কোনো হক নাই
অথচ সেই ভারতভাগের সময়ে যারা শত পুরুষের ভিটে মাটি ছেড়ে ভারতে আসতে বাধ্যহলেন.যারা ভারত ও বাংলাদেশের স্বাধীনতায় সব চেয়ে বেশি রক্ত দিলেন,তাঁদের 2003 সালে আইন করে প্রণব মুখার্জির নেতৃত্বে রাতারাতি বেনাগরিক ঘুসপেঠিয়া করে দেওয়া হল।বাংলার কোনো দলের কোনো নেতা সাংসদ বিরোধিতা করলেন না।একমাত্র জেনারেল শন্কর রায় চৌধুরী ছাড়া।এই আইন একনো পালটায়নি।
মোদী যখন 2014 সালের নলোকসভা নির্বাচন প্রচারে বাংলাদেশি ঘুসপেঠিয়াদের ওপারে ফেরত পাঠাবার ঘোষণা করলেন বারম্বার,তখন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন,কাউকে যদি ফেরত পাঠাতে হয,তাহলে তাঁকে ফেরত পাঠাতে হবে।মরিচঝাঁপির তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির কথা তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে বার বার বলেছেন,মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ভুলে গেছেন।
ইতিমধ্যে ভারতজুড়ে সমস্ত রাজ্যে উদ্বাস্তু আন্দোলন ও ভারতের 22টি রাজ্যে নিখিল বারত উদ্বাস্তু সমিতির সংগঠনের লাগাতার প্রয়াসে ভারত সরকারের তরফে বাংলাদেশিদেরও নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যনাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সংসদে পেশ হয়েছে,কিন্তু শত্রুপক্ষ অত্যন্থ ক্ষমতাবান যাদের পিছনে বাংলার রাজনীতি ত আছেই,এক শ্রেণী ঘর ভেদী বিভীষণ উদ্বাস্তু স্বয়ংভূ নেতারাও আছেন,যাদের সম্মিলিত চেষ্টায় এই বিলটি সংসদের এই অভিবেশনে পাশ ত হলই না ,আদৌ হবে কিনা জানা নেই,যেহেতু উদ্বাস্তুদের বেঁচে বর্তে থাকার, নাগরিকত্বের, মানবাধিকারে কোনো দায়বদ্ধতা বাংলার শাসক শ্রেণী জমিদার বংশধরদের নেই।
তা সত্বেও উদ্বাস্তু আন্দোলনের ফলে নোটিফিকেশান হয়েছে যে উদ্বাস্তুদের হাযরানি বন্ধ করতে হবে,তাঁদের বিদেশি বলে ঠেলে ফেলে গ্রেফতার করা চলবে না।
বাংলার বাইরে যেখানে 2003সালের আইন বলে উদ্বাস্তুদের হায়রানি ,এমনকি ডিপোর্টেশানও করা হয়েছে,সেখানেও উদ্বাস্তুদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে।
সব রাজ্যেই আন্দোলনের ফলে হায়রানি বন্ধ হয়েছে।একমাত্র আসামে উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব নাকচ করে ডিটেনশান ক্যাম্পে কয়েদ করা হচ্ছে।সেখানেও আন্দোলন চলছে এবং সেই আন্দোলনকে পক্ষ বিপক্ষের সবাই সমর্থনও করছেন।
এটা সংযোগবশ দুর্ঘটনা নয়ই কি সারা বাংলা ভারতভাগের বলি উদ্বাস্তুদের জন্য যন্ত্রণা শিবির ডিটেনশান ক্যাম্প হয়ে গিয়েছে।
বাংলার নূতন মন্ত্রী সভায় একজন ও উদ্বাস্তু মন্ত্রী নেই।সীমান্তে ত বটেই,সারা বাংলায়যেখানে সেখানে ওপার বাংলার মানুষকে ঘুসপেঠিয়া তকমা দিয়ে গ্রেফ্তার করা হচ্ছে,হাযরানি করা হচ্ছে যেমনটা কয়েক বছর আগেও দিল্লীতে বা মুম্বাইয়ে হত,এখন হচ্ছে না।
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বলে থাকেন যে বাংলায় কোনো বাংলাদেশি ঘুসপেঠিয়া নেি,কিন্তু তাঁর পুলিশ ও প্রশাসন রজই কোথাও ন কোথাও ওপার বাংলার মানুষদের ঘুসপেঠিয়া বলে গ্রেফতার করছেন কেন্দ্র সরকারের নিষেধাকজ্ঞা সত্বেও।
এর পরও যদি উদ্বাস্তুরা একতাবদ্ধ না হনত কপালে আরো অনেক বিপর্যয় আছে ত বটেই,ক্রমশঃ ওপার বাংলার সব মানুষদের জন্যবাংলায় ডিটেনশান ক্যাম্প হচ্ছেই।
যেমন আজ ১৩ আগষ্ট ২০১৬ ভোরবেলা পশ্চিম বাঙলার হ্যালেঞ্চার পার্শবর্তী অঞ্চলথেকে ঘুমের ঘরে এগারো বাবো ক্লাশের স্কুল ছাএদের বাঙলাদেশি ঘুষপেঠিয়া অজুহাতে পুলিশ বাড়ীতে গিয়ে এরেষ্ট করে এবং ধরে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে আসে।
নিখিল ভারত বাঙালি উদ্বাস্তু সমন্বয় সমিতির সমাজব্রতী নেতৃত্ব শ্রী অনুপম রায় ও বাদল সরকার,(প্রধান শিক্ষক)হ্যালেঞ্চা থানা থেকে তাদের ছাড়িয়ে আনেন।সহযোগীতার হাত বাডিয়ে দেন শ্রী শ্যামল বালা ও গৌতম রায়।কেন্দ্র সরকারে নোটিশ দখার পর পুলিশ তাঁদের ছাড়তে বাধ্য হয়। ঠিক এমনতর গণ সংগঠন প্রত্যেকটি জেলায় মহকুমায় তৃণমূল স্তরে গড়ে তুলেই আমরা আমাদের স্বজনদের বাঁচাতে পারি,অন্যথা নয়।
সমিরিত একনিষ্ট সমাজসেবক শ্রী হীরেনময় সরকার,নেপথ্যে সারাদির সবারসংগে যোগাযোগ করে,ছাএদের রেহাইয়ের ব্যবস্থা করেন।
নেপথ্যে সাহায্য করেছেন অসীম বাবু,ডা মৃনাল সিকদার ও সমিতির অনেকে।
হেলন্চায় সংগঠন ছিল বলেই মুক্তি পেল ১৩ জন স্কুল ছাএ।নতুবা আজ তাদের স্থান হোত হাজতে।যেখানে সংগঠন নেই,সেখানে কিছুই করা সম্ভব হবে না।
সবাইকে নিখিল ভারত বাঙালি উদ্বাস্তু সমন্বয় সমিতির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়েচে।নিখিল ভারত বাঙালি উদ্বাস্তু সমন্বয় সমিতির কেন্দ্রীয় ও রাজ্যনেতৃত্বের তরফে আবেদন করা হয়েছে, এই জাতীয় ঘটনা হলে নিখিল ভারত বাঙালি উদ্বাস্তু সমন্বয় সমিতির নেতৃত্বকে অবিলম্বে জানান।
যাদের পুলিশ আটক করা হয়েছিল, তাদের নাম....নীচে দেওয়া হল।
উৎপল বিশ্বাস,রহিত বালা,কল্লোল বিশ্বাস,অর্নব সরকার,সৌরব বালা,অব্ভ্র মল্লীক,প্রবীর বিশ্বাস, ইসান সরকার,অপুর্ব সরকার,প্রতাভ রায়,কৌশিকবালা,সম্রাট বিশ্বাস,রথীন রায়।
এরা সবাই দশ বারো ক্লাসের ছাএ। এছাড়া দুইজন বাংলাদেশি ভ্রমন কারি ধরা পড়ে। তারা পাসপোর্ট দেখালে ছেড়ে দিয়েছে।
নীচে অভিযুক্তদের থানা থেকে মুক্ত করার পরের ফটো।সঙ্গে আছেন সমিতির সক্রিয় সদস্য অনুপম রায়।
No comments:
Post a Comment