Thursday, August 4, 2016

Sarita Ahmedবলি, হ্যা গা দিমুনি, এত যে কেলানি দিলি, মাইনে বাড়ল ক'পয়সা?

Sarita Ahmed
আজ নাকি আবার এক শিক্ষিকা ক্লাস ফোর-কে ঠ্যেঙিয়েছে দমদমে?
গলায় লাল দাগ, গালে কালশিটে তায় আবার ১৫ মিনিটের নীল-ডাউন।
বলি, হ্যা গা দিমুনি, এত যে কেলানি দিলি, মাইনে বাড়ল ক'পয়সা?
এই বেসরকারি ইস্কুলের অতি-অর্কমাদের ট্রেনিং নিতে হয় আমাদের কাছে।
★ সিলেবাসের পুঁথি শেষ করার বাইরেও,
অফ পিরিওডে মিড-ডে -মিলের হিসেব যখন পাইপয়সার নিরিখে দেখতে হবে,
★সারাদিন লাইন ধরে রকমারি হতশ্রী প্রকল্পের হিসেবনিকেশ করে, Sc ST OBC BPL তালিকায় রোল স্ট্রেন্থ হিসেবে নিখুঁত ডেটা সাবমিট করে দিনের শেষে যেচে স্পন্ডেলোসিসের ব্যাথাকে যখন নেমন্তন্নপত্র দিতে হবে,
★" আয় বাবা আধার কার্ডের জেরক্সটা জমা দিয়ে যা বাবা। নইলে নন -আধার তালিকায় নাম চলে যাবে। ব্যাঙ্কে ঝামেলা করবে। শিগগির দে, নইলে টাকা ঢুকবে না" বলে বলে যখন ভোকাল কর্ড ছিঁড়ে যাবে,
★"মেয়েদের টয়লেটে তুই কেন নোংরা করেছিস? তোদেরটা পরিস্কার ছিল না খবর দিলেই কাজ হয়ে যেত বাবা। " অথবা "ডাইরেক্ট সেভেনে ভর্তি হবে? ক্লাস ফোরের পরে এদ্দিন কোথায় পড়েছ বাবা ! আদৌ অ আ ক খ, এ বি সি ডি কিছু জানো? " জিজ্ঞেস করতে করতে যখন কালঘাম ছুটবে,
★বাড়ির ভাষা হিন্দি- দেহাতি- অলচিকি হওয়া স্বত্ত্বেও ছেলেমেয়ে কেন বাংলাস্কুলে ভর্তি হয়েছে এ প্রশ্ন গার্জেন মিটিং-এ হাজারবার মধুমাখা গলায়
পুছতাছ করলেও জবাবে যখন কেবল মরা-মাছের- দৃষ্টি মিলবে,
★ " ছেলে তো একদম লেখাপড়া করছে না, বাড়িতে একটু নজর দিন। ভাল ছাত্র ছিল এখন একেবারে গোল্লায় যাচ্ছে, কেন সেটা দেখুন। হেল্প লাগ্লে বলুন। " -- এর উত্তরে " সিটো ঠিকই বইল্লেন, তবে আমি জানতে এয়েছি আমার ছিলা কি ডেরেসের টেকাটুকা পাবেক লাই? মিয়াটো পাইঞ্চে। ছিলা টো পাই নাই... "
শুনে 'পরান যায় জ্বলিয়া রে' অবস্থা হলেও গলায় মিত্তিমিত্তি মধু ঢেলে যখন বলতে বাধ্য হবেন...
" তাই নাকি! আচ্ছা দেখছি। মেয়েরা তো সবাই ড্রেস গ্রান্ট ৪০০/- পায়, কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রে sc st দেরই ওই টাকা পাওয়ার কথা। আপনারা জেনারেল, তাই হয়তো... যাক গে, আমাদের হাতে তো কিছুই নেই। যা সরকারিভাবে পাওয়ার সবই ওরা পাবে টাইমমত, শুধু একটু দেখবেন ছেলে - মেয়ে যেন লেখাপড়াটা করে। "
এরপর তো উচ্চপ্রাথমিকের সাইকেলের হিসেব রেখে 'সবুজ সাথী' প্রকল্প,
উচ্চস্তরের ছেলেমেয়ের ফাকা ক্লাসরুমে যাওয়াআসার হিসেব রেখে 'জীবন সাথী'প্রকল্প ইত্যাদি নানা সোশাল সার্ভিসে নিয়োজিত হয়ে বুকের মাঝে রক্তচোষা চামচিকে ঝুলিয়ে ফিরতি বাসে ট্রেনে চাপবেন আর আশেপাশে ফ্রীতে উপযাচকের বানী হিসেবে "আসলে টিচিং তো ইয়ে মানে নোবেল প্রফেশন " শুনে দাঁত চিপে " হরি হে মাধব / চান করব না, গা ধোব! " টাইপ কেঠো হাসি হাসতে হবে...
তখন... ধৈর্য কাহারে কয় আপনিই শিখে যাবেন।
এসব নেই বলেই, প্রাইভেট ইস্কুলের দিদিমুনিরা 'খামোকা মাথা গরম থিওরি'তে ডিস্টিংশন পেলেও যেহেতু
'পরমানন্দ থিওরি' টা আয়ত্ত করতে পারেনি তাই এত কেলো!
নইলে কি সামান্য রোল-কল করতে গিয়ে মেজাজ হারায় আত কেস খায়!
স্যরি, প্রাইম টাইমে ফুটেজ খায়??
এ ঘোর পাইয়ে-দেওয়ার কলিকালে ফালতু এনার্জি অপচয় না করে আমাদের থেকে ধৈর্যবর্ধক বটিকার ফান্ডা গুলে খাও, নয় তো কপালে মিড ডে মিল নাচছে, বলে দিলাম !

No comments:

Post a Comment