Wednesday, September 28, 2016

মাতৃভাষা-সংস্কৃতির দাবিতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলাম,এবার প্রয়োজনে প্রাণ দেব কলকাতা নিউজ ২৪ : 26/09/2016 দেশ বদল হলেও আমাদের ভাগ্য বদলায়নি ranjit-sarkar বাংলা ভাগ করেছো,কিন্তু বাঙালিকে ভাগ করা যায়নি , দেশ বদল হলেও আমাদের ভাগ্য বদল হয়নি আজও- নিখিল ভারত বাঙালি উদ্বাস্তু সমন্বয় সমিতির সম্মেলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে রবিবার এমনটাই বললেন উত্তরপ্রদেশের সমন্বয় সমিতির সভাপতি ডা. রবিন দাস। কলকাতার লাগোয়া দূর্গানগরের সর্বভারতীয় প্রশিক্ষণ শিবিরের এদিন ছিল শেষ দিন। অসমের প্রতিনিধি হয়ে আসা রঞ্জিত সরকার মাতৃভাষা আর সংস্কৃতির দাবিতে একদিন অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। আত্বসমর্পন করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে এলেও আজ তাঁর দাবি পূরণ হয়নি, এবার তিনি গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েও প্রাণ দিতেও প্রস্তুত জানালেন দৈনিক যুগশঙ্খকে। একদা ঢাকার রঘুনাথপুরের বোয়ালিয়া গ্রাম থেকে দেশভাগের কারণে অসমের বরপেটা জেলার নেউলার ভিটা গ্রামে আশ্রয় নেন ভিটেমাটি হারা তরনী মোহন সরকার। সেদিন বিনা প্রতিরোধে এক কাপড়ে দেশ ছেড়েছিলেন তিনি। সেদিনের সেই যন্ত্রণা, উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন পুত্র রঞ্জিত সরকার। নতুন দেশে এসেও উদ্বাস্তু হওয়ার যন্ত্রনাকে বিনা প্রতিরোধে মেনে নিতে না পেরে হাতে তুলে নিয়েছিলেন অস্ত্র। ভাষা-সংস্কৃতির আগ্রাসন ঠেকাতে যুক্ত হয়েছিলেন বেঙ্গল টাইগার ফোর্সে একজন এরিয়া কমান্ডার রূপে। অসমের প্রতিটি থানায় তাঁর নামে ওয়ারেন্ট ছিল। কেন অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন? রঞ্জিত বলেন, আশির দশকে বাঙালিদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া শুরু হল বরপেটায়। নিরিহ বাঙালিদের ধরে নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে রাতের অন্ধকারে ছেড়ে দিয়ে আসা শুরু হল। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে আইনজীবী বাবুললাল সরকার,গৌরাঙ্গ মন্ডল শহিদ হলেন। আমরা রক্তে আগুন জ্বলে গেল। অত্যচার সহ্যে সীমা ছাড়িয়ে গেল ১৯৯৬ সালে ২৮ জন বাঙালি যুবক নিয়ে শুরু করলাম সশস্ত্র ট্রেনিং কোকাড়ঝাড়ের জঙ্গলে। অত্যাচারিত বাঙালিরা অর্থ সাহায্য করল, কেনা হল একে ৪৭, একে ৫৬,এসএল আর রাইফেল, কার্বাইন, গ্রেনেড। বাঙালি অধ্যুষিত এলাকার যুবকরা যোগ দিল আমাদের সাথে। শুরু হল মাতৃভাষার আর সংস্কৃতি রক্ষার দাবিতে আমাদের গেরিলা যুদ্ধ। এই যুদ্ধে মারা গেছেন শতাধিক অধিক বাঙালি যোদ্ধা। বেশ কয়েকটা অপারেশনের পর ধরা পড়লাম। জেল হল,জামিন পেয়ে আবার চলে গেলাম জঙ্গলে। আত্বসর্মপন করলেন কেন? এপ্রশ্নের উত্তরে রঞ্জিত বলেন, তরুণ গোগইয়ের সরকার প্রতিশ্রুতি দিল আমাদের দাবি মানা হবে, অস্ত্র ত্যাগ করলে। ২০০৬ আগস্ট মাসে ৮ তারিখে আমরা সেনাধাক্ষ্য সুভাষ সরকারের নেতৃত্বে ৩২৫ জন আত্বসর্মপন করে অস্ত্র জমা দিলাম। দাবি পূরণ হয়নি, উলটে মামলা এখনও চলছে। দেড় লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল কাশ্মির প্যাকেজ দেওয়া হবে তাও হয়নি। কংগ্রেস সরকার আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে-বললেন রঞ্জিত। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অস্ত্র জমা দিলেও, আর্দশ জমা দিইনি। শুধু অসম নয় ভারতের বুকে বাঙালিদের স্বীকৃতি দাবিতে প্রাণ দিতেও আমি রাজি। সৌজন্যে:দৈনিক যুগশঙ্খ

মাতৃভাষা-সংস্কৃতির দাবিতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলাম,এবার প্রয়োজনে প্রাণ দেব

কলকাতা নিউজ ২৪ : 26/09/2016
দেশ বদল হলেও আমাদের ভাগ্য বদলায়নি
ranjit-sarkar
বাংলা ভাগ করেছো,কিন্তু বাঙালিকে ভাগ করা যায়নি , দেশ বদল হলেও আমাদের ভাগ্য বদল হয়নি আজও- নিখিল ভারত বাঙালি উদ্বাস্তু সমন্বয় সমিতির সম্মেলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে রবিবার এমনটাই বললেন উত্তরপ্রদেশের সমন্বয় সমিতির সভাপতি ডা. রবিন দাস।
কলকাতার লাগোয়া দূর্গানগরের সর্বভারতীয় প্রশিক্ষণ শিবিরের এদিন ছিল শেষ দিন। অসমের প্রতিনিধি হয়ে আসা রঞ্জিত সরকার মাতৃভাষা আর সংস্কৃতির দাবিতে একদিন অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। আত্বসমর্পন করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে এলেও আজ তাঁর দাবি পূরণ হয়নি, এবার তিনি গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েও প্রাণ দিতেও প্রস্তুত জানালেন দৈনিক যুগশঙ্খকে।
একদা ঢাকার রঘুনাথপুরের বোয়ালিয়া গ্রাম থেকে দেশভাগের কারণে অসমের বরপেটা জেলার নেউলার ভিটা গ্রামে আশ্রয় নেন ভিটেমাটি হারা তরনী মোহন সরকার। সেদিন বিনা প্রতিরোধে এক কাপড়ে দেশ ছেড়েছিলেন তিনি। সেদিনের সেই যন্ত্রণা, উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন পুত্র রঞ্জিত সরকার। নতুন দেশে এসেও উদ্বাস্তু হওয়ার যন্ত্রনাকে বিনা প্রতিরোধে মেনে নিতে না পেরে হাতে তুলে নিয়েছিলেন অস্ত্র। ভাষা-সংস্কৃতির আগ্রাসন ঠেকাতে যুক্ত হয়েছিলেন বেঙ্গল টাইগার ফোর্সে একজন এরিয়া কমান্ডার রূপে। অসমের প্রতিটি থানায় তাঁর নামে ওয়ারেন্ট ছিল।
কেন অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন? রঞ্জিত বলেন, আশির দশকে বাঙালিদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া শুরু হল বরপেটায়। নিরিহ বাঙালিদের ধরে নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে রাতের অন্ধকারে ছেড়ে দিয়ে আসা শুরু হল। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে আইনজীবী বাবুললাল সরকার,গৌরাঙ্গ মন্ডল শহিদ হলেন। আমরা রক্তে আগুন জ্বলে গেল। অত্যচার সহ্যে সীমা ছাড়িয়ে গেল ১৯৯৬ সালে ২৮ জন বাঙালি যুবক নিয়ে শুরু করলাম সশস্ত্র ট্রেনিং কোকাড়ঝাড়ের জঙ্গলে। অত্যাচারিত বাঙালিরা অর্থ সাহায্য করল, কেনা হল একে ৪৭, একে ৫৬,এসএল আর রাইফেল, কার্বাইন, গ্রেনেড। বাঙালি অধ্যুষিত এলাকার যুবকরা যোগ দিল আমাদের সাথে। শুরু হল মাতৃভাষার আর সংস্কৃতি রক্ষার দাবিতে আমাদের গেরিলা যুদ্ধ। এই যুদ্ধে মারা গেছেন শতাধিক অধিক বাঙালি যোদ্ধা। বেশ কয়েকটা অপারেশনের পর ধরা পড়লাম। জেল হল,জামিন পেয়ে আবার চলে গেলাম জঙ্গলে।
আত্বসর্মপন করলেন কেন? এপ্রশ্নের উত্তরে রঞ্জিত বলেন, তরুণ গোগইয়ের সরকার প্রতিশ্রুতি দিল আমাদের দাবি মানা হবে, অস্ত্র ত্যাগ করলে। ২০০৬ আগস্ট মাসে ৮ তারিখে আমরা সেনাধাক্ষ্য সুভাষ সরকারের নেতৃত্বে ৩২৫ জন আত্বসর্মপন করে অস্ত্র জমা দিলাম।
দাবি পূরণ হয়নি, উলটে মামলা এখনও চলছে। দেড় লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল কাশ্মির প্যাকেজ দেওয়া হবে তাও হয়নি। কংগ্রেস সরকার আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে-বললেন রঞ্জিত।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অস্ত্র জমা দিলেও, আর্দশ জমা দিইনি। শুধু অসম নয় ভারতের বুকে বাঙালিদের স্বীকৃতি দাবিতে প্রাণ দিতেও আমি রাজি।
সৌজন্যে:দৈনিক যুগশঙ্খ

No comments:

Post a Comment