Friday, April 8, 2016

আজ ধম্ম দিশা দিবসঃ Saradindu Uddipan

আজ ধম্ম দিশা দিবসঃ
Saradindu Uddipan
“হিন্দু ধর্মের মূল নীতিগুলি এবং চতুর্বর্ণ ব্যবস্থা এমন স্থায়ী ভাবে পরিকল্পিত হয়েছে যে কোন মানুষকেই এই ধর্ম খুশি করতে পারেনা। মানুষের মধ্যে ভেদ ভাব স্থায়ী করে রাখার জন্য এই চতুর্বর্ণ ব্যবস্থা ভয়ঙ্কর ভূমিকা পালন করে। শিক্ষার অধিকার ব্রাহ্মনের, দেশ রক্ষার অধিকার ক্ষত্রিয়ের, ব্যবসার অধিকার বৈশ্যের এবং শূদ্রের অধিকার শুধু পদসেবার? এই ধর্মে ব্রাহ্মণ লাভবান হতে পারে, ক্ষত্রিয় লাভবান হতে পারে, বৈশ্য লাভবান হতে পারে কিন্তু শূদ্র”?
“যদি একজন ব্রাহ্মণ রমণী সন্তানের জন্ম দেয়, জন্মের পর থেকেই তার লক্ষ্য থাকে হাইকোর্টের বিচারকের চেয়ারটির দিকে যা খালি হতে পারে। কিন্তু আমাদের কোন ঝাড়ুদার রমণীর বিছানায় সন্তান এলে তার লক্ষ্য থাকে ঝাড়ুদার পদের দিকে। হিন্দু ধর্ম এমনি সর্বনাশা বিধান তৈরি করে রেখেছে”।
ভগবান বুদ্ধের বিচারধারায় ৭৫% ভীক্ষুরা ছিলেন ব্রাহ্মণ; ২৫% ছিলেন শূদ্র এবং অন্যান্য। কিন্তু ভগবান বুদ্ধ বলেছিলেন, “ হে ভিক্ষুগণ, আপনারা বিভিন্ন দেশ, বিভিন্ন ধর্ম এবং বিভিন্ন জাতি থেকে এসেছেন। নদীসমূহ তাদের নিজের দেশ দিয়ে প্রবাহিত হয়, কিন্তু সমুদ্রে যখন মিলিত হয় তখন তারা আর নিজের পরিচয় রাখে না। তারা সমান এবং এক হয়ে যায়। বৌদ্ধ সাধুদের ভাইচারা এই সমুদ্রের মত। এই সঙ্গমে সবাই সমান। সমুদ্রে মিলিত হলে কোনটি গঙ্গার জল আর কোনটি মহানদীর জল চেনা যায় না। এই ভাবে আপনারা যখন বুদ্ধ সংঘে এসেছেন আপনাদের জাতি পরিচয় বিলীন হয়ে গেছে, আপনারা এখন সমান”।
পৃথিবীতে একটি মানুষই এই সাম্যের কথা বলেছেন তিনি ভগবান বুদ্ধ।
এই পথ কোন নতুন পথ নয়। এই সাম্যের পথ ভারতেই তৈরি হয়েছে। ভগবান বুদ্ধ এই পথকেই নতুন ভাবে চিনিয়েছিলেন। এখন আমাদের সুযোগ এসেছে ধর্মকে যুগের উপযোগী মানুষের উপযোগী হিসেবে তৈরি করে নেবার। এই খোলা মানসিকতা অন্য ধর্ম মতে নাই”।
(......১৯৫৬ সালের ১৫ই অক্টোবর, ধম্ম পাবত্তন সম্পর্কে বাবা সাহবে ডঃ বি আর আম্বেদক রের ভাষণ থেকে নেওয়া)
আজ ১৪ অক্টোবর। এক মানবিক ধম্ম দিশার অমলিন দিন। ১৯৫৬ সালের এই দিনে বাবা সাহেব ডঃ বিআর আম্বেদকর নিপীড়িত, নিষ্পেষিত লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে স্বধম্মে পাবত্তন করেছিলেন। এই দিনে তার প্রতি রইল আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা।
বুদ্ধাম নমামি, ধম্মম নমামি সঙ্গম নমামি।

No comments:

Post a Comment