'দলবিহীন,পতাকাবিহীন,রঙবিহীন' ইত্যাদি ইত্যাদি প্রসঙ্গে
প্রথম ইত্যাদিটা স্বাধীন হতে পারত, কিম্বা দ্বিতীয়টা স্বতঃস্ফুর্ত। কিন্তু এর মাঝে অদৃশ্য এক আপত্তি বসে থেকে সব ভেস্তে দিল। সেই আপত্তিই প্ররোচিত করল এই লেখার সূত্রপাতে। বস্তুত বলা যায় এই লেখা সেই আপত্তিরই দৃশ্যমান রূপ।
প্রিয় স্বাধীনতা,
তোমার কথা ইদানীং খুবই মনে পড়িতেছে। কখনও শোনা যাইতেছে তুমি উঁকি দিতেছ মধ্যবিত্তের বুকপকেটে মাত্র ২৫১ টাকায়। কখনো বা তুমি ঝড়িয়া পড়িতেছ সিয়াচেনে শুভ্র গিরিশৃংগে। আবার তোমার নামেই জয়ধ্বনি দিইয়া সিডিশনাক্রান্ত হইতে হইছে দেশের ছাত্রছাত্রীদের। এতসব নানা কিছু দেখিয়া আমি স্পষ্ট বুঝিতে পারিতেছি কোনো খানেই আসলে তুমি নাই। তোমার নামে মিথ্যে রটনা রটাইয়া বাজারী মিডিয়াকূল স্ব-স্ব অর্থ সুরক্ষিত করিতেছে। এমতাবস্থায় বিনীত অনুরোধ তুমি শীঘ্র জানান দাও তুমি আসলে ঠিক কোথায় কীভাবে আছো। সাথে একটা পাসপোর্ট ফটোগ্রাফ পাঠাইলে সমস্ত দ্বিধা দূর হইবে।
তোমার কথা ইদানীং খুবই মনে পড়িতেছে। কখনও শোনা যাইতেছে তুমি উঁকি দিতেছ মধ্যবিত্তের বুকপকেটে মাত্র ২৫১ টাকায়। কখনো বা তুমি ঝড়িয়া পড়িতেছ সিয়াচেনে শুভ্র গিরিশৃংগে। আবার তোমার নামেই জয়ধ্বনি দিইয়া সিডিশনাক্রান্ত হইতে হইছে দেশের ছাত্রছাত্রীদের। এতসব নানা কিছু দেখিয়া আমি স্পষ্ট বুঝিতে পারিতেছি কোনো খানেই আসলে তুমি নাই। তোমার নামে মিথ্যে রটনা রটাইয়া বাজারী মিডিয়াকূল স্ব-স্ব অর্থ সুরক্ষিত করিতেছে। এমতাবস্থায় বিনীত অনুরোধ তুমি শীঘ্র জানান দাও তুমি আসলে ঠিক কোথায় কীভাবে আছো। সাথে একটা পাসপোর্ট ফটোগ্রাফ পাঠাইলে সমস্ত দ্বিধা দূর হইবে।
যেহেতু আমাদের কাছে এই চিঠির কোনো জবাব এখনো এসে পৌঁছায়নি, তাই 'স্বাধীনতা'র পাসপোর্ট ফটোগ্রাফটিও নেই সাথে। সুতরাং আপাতত স্বাধীনতা কে যেভাবে আপাদমস্তক 'আপন মনের মাধুরী মিশায়ে' বাজারে ছাড়া হচ্ছে সেই পথেরই শরিক হতে হল। 'দলবিহীন-পতাকাবিহীন-রংবিহীন' এই তিন শব্দবন্ধের এ'রকম কোনও সমস্যা নেই। তাদের চিনতে পাসপোর্ট ফটোগ্রাফ লাগেনা কোনো। তাই প্রথমেই স্পষ্ট করে দিই স্বাধীনতা বলতে আমরা যাই বুঝি না কেন সেটা কোনোভাবেই নিচের সমীকরণটি নয়ঃ
স্বাধীনতা = দলবিহীন + পতাকাবিহীন + রংবিহীন + অজানা ধ্রুবক।
স্বাধীনতা = দলবিহীন + পতাকাবিহীন + রংবিহীন + অজানা ধ্রুবক।
আমরা দলে বিশ্বাস করি। সেই দলের নামকরণও করি এবং দলের নাম কাপড়ে লিখে পতাকাও বানাই। এই দল এই নাম এই পতাকা সবকিছুরই একটা ঐতিহাসিকতা আছে। সেই ঐতিহাসিক পরম্পরা, তার বিবর্তনকে আমরা ধারণ করি আমাদের সাংগঠনিক অভ্যাসে। আর অবশ্যই পরম্পরার সাথে জুড়ে আছে একটি বিশেষ রঙ। হ্যাঁ। 'আমাদের প্রিয় রঙ লাল'। সেই একই লাল রঙ একই রকম শব্দবন্ধ ব্যবহার করে কেউ যদি শাসকের দালালি করে চলে তার দায় সেই রঙয়ের নয় এই সহজ কথাটা সকলেরই জানা। শুধু তাইই নয়, আমরা দল করি কারণ আমরা মনে করি দলের মাধ্যমে সংগঠিত না হলে প্রকৃতভাবে স্বতঃস্ফূর্ততাকে ধারণ এবং তার যথাযথ ডিসিসিভ বহিঃপ্রকাশ সম্ভব নয়।
আমাদের কাছে স্বাধীনতা মানে দল-না-করা নয়। আমরা আমাদের রাজনীতি স্বাধীন বলি কারণ সেটা এই সমাজের বুকে 'রাজনীতি'র যা প্রচলিত ধারণা অর্থাৎ যে 'রাজনীতি' এই ব্যবস্থাটাকেই কীভাবে আরো ভালোভাবে টিকিয়ে রাখা যায় তার বন্দোবস্ত করে, সেই 'রাজনীতি'র অধীন নয়, তার থেকে স্বতন্ত্র, স্বাধীন।
এই স্বাধীনতা ডিমার্কেট করে আমাদের রাজনীতিকে শাসকের রাজনীতি থেকে। আর সেই স্বাধীন রাজনীতি নির্মাণের জন্যই দলের প্রয়োজন। স্বতঃস্ফূর্ততা কে দাবিয়ে রাখা নয়, তার বিকাশের জন্যই দরকার সচেতন সংগঠিত উদ্যোগ। স্বতঃস্ফূর্ততা এবং সচেতনতা আসলে কোনোটাই কারুর অধীনে নয়, বরং এই দ্বন্দের দিকগুলো পরস্পর পরস্পরকে সমৃদ্ধ করে এবং একটা লড়াই কে বিকশিত করতে পারে। চোখ কান খুলে দেখলে ইতিহাস থেকে এই শিক্ষাই পাওয়া যায়।
যারা 'দলবিহীন-পতাকাবিহীন-রংবিহীন' স্বাধীনতার কথা বলছেন, তাদেরকে একটু স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভেবে দেখতে বলব।
আমাদের কাছে স্বাধীনতা মানে দল-না-করা নয়। আমরা আমাদের রাজনীতি স্বাধীন বলি কারণ সেটা এই সমাজের বুকে 'রাজনীতি'র যা প্রচলিত ধারণা অর্থাৎ যে 'রাজনীতি' এই ব্যবস্থাটাকেই কীভাবে আরো ভালোভাবে টিকিয়ে রাখা যায় তার বন্দোবস্ত করে, সেই 'রাজনীতি'র অধীন নয়, তার থেকে স্বতন্ত্র, স্বাধীন।
এই স্বাধীনতা ডিমার্কেট করে আমাদের রাজনীতিকে শাসকের রাজনীতি থেকে। আর সেই স্বাধীন রাজনীতি নির্মাণের জন্যই দলের প্রয়োজন। স্বতঃস্ফূর্ততা কে দাবিয়ে রাখা নয়, তার বিকাশের জন্যই দরকার সচেতন সংগঠিত উদ্যোগ। স্বতঃস্ফূর্ততা এবং সচেতনতা আসলে কোনোটাই কারুর অধীনে নয়, বরং এই দ্বন্দের দিকগুলো পরস্পর পরস্পরকে সমৃদ্ধ করে এবং একটা লড়াই কে বিকশিত করতে পারে। চোখ কান খুলে দেখলে ইতিহাস থেকে এই শিক্ষাই পাওয়া যায়।
যারা 'দলবিহীন-পতাকাবিহীন-রংবিহীন' স্বাধীনতার কথা বলছেন, তাদেরকে একটু স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভেবে দেখতে বলব।
No comments:
Post a Comment