পশ্চিম বঙ্গের পুরনো নাম গৌড়, বাংলাদেশের পুরনো নাম বঙ্গ। ১২০৪ খ্রিস্টাব্দে বখতিয়ার খিলজি বৌদ্ধদের অনুরোধে বাংলা বিজয় করলেও গৌড় এবং বঙ্গ অঞ্চল নিজ নিজ নামেই পরিচিত ছিল। পরবর্তিতে ১৩৪২ খ্রিস্টাব্দে সুলতান শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ ক্ষমতায় আসার পর গৌড় (পশ্চিম বঙ্গ) কে বঙ্গের সাথে একত্রিত করে পুরা অঞ্চলের নাম রাখেন বঙ্গ।
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে আবার বঙ্গ এবং গৌড় আলাদা হয়ে যায়। সে সময় উভয় অঞ্চল মিলে বাঙালি মুসলমান ছিল মোট জনসংখ্যার ৫৪%, হিন্দু এবং অনন্য ধর্ম মিলে ছিল ৪৬%। হিন্দুরা মাইনরিটি হয়েও ব্রিটিশদের আশির্বাদে কর্তৃত্ব করত। বৃটিশরা চলে যাওয়ার প্রাক-কালে মুসলিম মেজরিটি বাঙালির কাছে কর্তৃত্ব হারানোর ভয়ে বাঙালি হিন্দুরা বাংলাকে দুই ভাগ করে হিন্দু মেজরিটি অঞ্চল নিয়ে 'পশ্চিম বঙ্গ' নামে আলাদা প্রদেশ করে ভারতের অধীনস্ত হবার দাবিতে আন্দোলন শুরু করলো।
বাংলা ভাগের দাবিতে বেঙ্গল কংগ্রেস এবং হিন্দু মহাসভা সর্বমোট ৭৬ টি জনসভা করেছে- যার মধ্যে কংগ্রেস করেছে ৫৯ টি, হিন্দু মহাসভা করেছে ১২ টি এবং যৌথভাবে করা হয়েছে ৫ টি। বাংলা ভাগের এ আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে নেহেরু এবং প্যাটেল।
তবে ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে বলা যায় বাংলা / বঙ্গ ভাগ হয়নি বরং গৌড় 'পশ্চিম বঙ্গ' নামে তার আগের অবস্থানে ফিরে গেছে।
১৯৪৭ সালে গৌড়কে বংগ থেকে আলাদা করতে কলকাতাবাসী ব্রাম্মণ বাবুরা কি না করেছে, জানতে এই সিরিজের লেখাগুলো অবশ্যপাঠ্য।
No comments:
Post a Comment