Thursday, June 30, 2016

Sarita writes on Festival hype marketing centred on Eid.It exposes the exploitaion of faith and culture in the Free Market Economy which we witness during Deshhara,New Year,Diwali and so on.We have not addressed the issue as yet.Please read this most readable content,Palash Biswas

Sarita writes on Festival hype marketing centred on Eid.It exposes the exploitaion of faith and culture in the Free Market Economy which we witness during Deshhara,New Year,Diwali and  so on.We have not addressed the issue as yet.Please read this most readable content,Palash Biswas
Sarita Ahmed 
Sarita Ahmed's Profile Photo
ঈদ আসছে , ঈদ আসছে করে বাজার একটা বেশ হাইপ তুলেছে । এখানে ডিস্কাউণ্ট, ওখানে অফার, এখানে গেট , ওখানে তোরণ । মিডিয়া তো আজকাল শুধু ঈদ বলে না , সাথে আবার 'খুশির' বলে একটা লেজুড় জুড়ে দেয় । তা এদ্দিন ধরে যেসব ঈদ দেখেছি তাতে আলাদা করে 'খুশি' হওয়ার মত কিছু খুঁজে পাই নি ।
এই নিয়ে তো গতকাল প্রায় তর্কই হয়ে গেল । এখনকার শহুরে হুজুগ, গাঁক গাঁক করে মাইক বাজানো বা চাঁদা তোলা ঈদের খুশির কথা বলছি না।
ছোটবেলা থেকে রোজার ঈদ, যা গ্রামের বাড়িতে দেখেছি তার আয়ু স্রেফ দশমিনিট । হ্যাঁ, স্রেফ দশমিনিট বা খুব জোর আধঘণ্টা । ছেলেরা-বাবারা-কাকারা ঈদগাহে জামাতে দাঁড়িতে দশমিনিটের ঈদের নামাজ পড়ল ; আমরা কচিকাঁচারা বাইরে ফুলুরি-হাওয়ামিঠাই কিনে খেলাম ।
তারপর নামাজ ফেরত ছেলেরা কোলাকুলি করে সবাইকে 'ঈদ মুবারক' জানালো; আমি গালে ফুলুরি গুঁজে হাঁ করে চেয়ে দেখলাম । দু'একজনকে অমন জড়িয়ে 'ঈদ মুবারক' বলার চেষ্টা করতেই কেউ টেনে সরিয়ে নিল ' ওসব মেয়েদের জন্য না ।' তারপর বাড়ি এসে মুরগী কেটে যে যার মত ডিশ বানিয়ে খানাপিনা শুরু । নতুন জামায় ঝোল পড়ে দাগ হল, ব্যাস ঈদ শেষ ! এই তো হয়ে এসেছে এতকাল ।
মেয়েদের তো সেই ঘরের মধ্যেই যা কিছু । খুশি হোক , অখুশি হোক ওতেই তাদের ফ্যান্টাসি । বাচ্চাবেলায় যখন পিরিওড হয়ও নি , তখনো দেখেছি আমাদের মসজিদ তো ছাড়, ঈদগাহে মানে যেখানে নাকি খুশির ঈদের নামাজ পড়া হয়, সেখানে পযর্ন্ত ঢুকতে দেওয়া হত না । আমরা ঢুকলে ধর্মে সইবে না ।
তাই নতুন জামা পরে আমরা বাবা-কাকার হাত ধরে ঐ গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছেলেদের ঈদ পালন দেখতাম আর দু'টাকার ফুলুরি খেতাম । ওই ঠোঙ্গা যতক্ষণ ,খুশির ঈদও ততক্ষণ ।
শুনেছি ঈদে বাড়িতে আত্মীয়কুটুম এলে তাদের সাথে মেলবন্ধন- খানাপিনা এসবই নাকি খুশির পরিচায়ক । আমার আত্মীয়বাড়ি বলে একটি জায়গা আছে , কিন্তু আমি গেলে তাদের বিশেষ 'খুশি' হতে দেখা যায় না । বরং একটি স্বনির্ভর সিঙ্গল মেয়ের উপস্থিতি তাদের হতাশ করে । নামাজ না-পড়া ,কোরান না জানা, কেবল প্রশ্ন করা কুটুম হয়তো তাদের নাপাকও করে ।
প্রশ্নটি এমন কিছুই না ।
--- এই যে বাড়ির মহিলারা যারা সারা বছর হেঁশেল ঠেলেছে , আজকে ঈদের দিন তো তাদের ছুটি দিয়ে বাড়ির অন্যান্যরা হাত লাগিয়ে রান্নাবান্না করতে পারে । বেশ নতুনত্ব আসবে ,ভিন্নস্বাদের সেলিব্রেশান হবে । হতে পারে না?
সবার মুখ তোম্বা হয়ে যায় , কেউ কেউ জিভ কাটে । মুসলমান বাড়িতে এহেন অ্যান্টি-ট্রাডিশানাল প্রশ্ন ইসলাম বিরূদ্ধ ! অথচ আমার স্কুল পড়ুয়া ভাইপো যখন বলে, 'আমি প্লেটটা ধোব কেন ? আমি কি মেয়ে !' তখন সবাই মুখে হাসি নিয়ে চাপা প্রশ্রয়ের দৃষ্টি বিনিময় করে ।'ধর্মসম্মত'ভাবেই ছেলে বড় হচ্ছে, কথা ফুটছে । আমার নষ্টমাথায় কেবল এসব খুশির কোলাজ কিলবিল করে ।
আমি যেমন রোজা-নামাজ করি না , তেমনি জাকাতও দিই না । জাকাত ব্যাপারটা একে তো রোজগারের কিসব % এর অঙ্কের উপর দাঁড়িয়ে, তায় বাস্তবে দেখেছি মুসলমান টু মুসলমানে সীমাবদ্ধ । দরিদ্রের ধর্ম দারিদ্র, উপাস্য খাদ্য । কিন্তু বাবা-চাচাদের দেখতাম দুয়ারে কোনো হিন্দু পাড়ার ভিখিরি এলে 'নেই' বলে হাত উলটে দিত । বেছে বেছে মুসলিম ভিখিরিকেই চাল-টাকা যা হোক দিত ।
ছোটবেলায় শুধিয়েছিলাম , এরম কেন ?
বাবা বলেছিল -- ধর্মে আছে । আর তাছাড়া ওসব হিন্দুদের মেলা টাকা । আমাদের কাছে খালি ঈদের সময় উপরি চাইতে আসে । অন্য সময় তো আমাদের বাড়ির ছায়াও মাড়ায় না , হাতের রান্নাও খায় না ।
কথা সত্যি । ছোঁয়া ছুঁইয়ি -জাতপাত এসবের বেড়া এত বেশি যে পূন্য কামানোর সময়ও সেসব বাছবিচার করা ফরজ ।
তা যে 'দান-খয়রাতে' এত বৈষম্য, এত সমালোচনা, এত বিশ্বাস অবিশ্বাসের ক্লেদ ... অমন সোশাল সার্ভিসে আমার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই । মানুষের জন্য কাজ করতে চাইলে সারাবছরই নানাভাবে তা করা যায় । 'বিশেষ দিন' তো জান্নাতলোভীদের জন্য বরাদ্দ ।
হ্যাঁ তো যা বলছিলাম, মূলত খাওয়াদাওয়ার মধ্যেই মুসলমানের খুশি মেহফুজ থাকে । হাঁড়ির মধ্যেই খুশির ঈদ বা ঈদের খুশি । সেটা লাচ্ছা হোক , সেমাই হোক , ফিরনি হোক , হালিম হোক বা পোলাও-কোর্মা । এর বাইরে 'কালচার' বলে আর কিছু তো আমি খুঁজে পাই নি ।
সারাবছর বাড়ির মেয়েরা হেঁশেল ঠ্যেলে, ঈদের দিনেও সেই একইভাবে । তফাৎ বলতে সারা বছর হলুদ লাগা ঘেমো শাড়ি লেপ্টে বেজার মুখে , আর এদিন নতুন আতরমাখা শাড়ি জড়িয়ে মুখে এক গাল হাসি নিয়ে । বাড়ির পুরুষ সদস্যরা সারাবছর যেমন গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘোরে , এদিনও তাই । তফাৎ বলতে এদিন গায়ে আতরের সাথে একটু বেশি খুশির সুরমা লাগিয়ে !
অথচ ঈদের এই 'খুশি'র সারাংশটুকু সোজাসুজি বলতে গেলেই কপালে কেবল ছিছিক্কার জোটে !

No comments:

Post a Comment