Saturday, June 4, 2016

আজ ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে একটি প্রকৃত ‘মানবিক’ পৃথিবীর লক্ষে গান,বক্তব্য নাটক,পোস্টার নিয়ে আমরা ছড়িয়ে পড়ব বিভিন্ন জায়গায়...

Ami Bohiragato Sayan
আজ ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে একটি প্রকৃত ‘মানবিক’ পৃথিবীর লক্ষে গান,বক্তব্য নাটক,পোস্টার নিয়ে আমরা ছড়িয়ে পড়ব বিভিন্ন জায়গায়...
বিকেল ৪-টেয় বর্ধমান ষ্টেশন থেকে ভ্রাম্যমান সাইকেল র‍্যালি ও পথসভা। সেখান থেকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ব আমরা...
চন্দননগর স্ট্যাণ্ড ঘাটে বিকেল ৫-টা থেকে বক্তব্য-নাটক-গান-কবিতা-পোস্টার নিয়ে থাকছি।
শ্রীরামপুর ষ্টেশন সংলগ্ন অঞ্চলে বিকেল ৪-টে থেকে বক্তব্য-ইস্তাহার-পোস্টার প্রদর্শনী।
দমদমে নাগেরবাজার বাসস্ট্যাণ্ডে পথসভা। দুপুর ৩টে তে। একটি পথ নাটক গান বক্তব্য নিয়ে জড়ো হচ্ছি আমরা।
বারাসাতে বিকাল ৪টে তে বিধান সিনেমা হলের সামনে আমরা জড় হব। নিজেদের মনে হওয়া গুলো ভাগ করে নেব আপনাদের সাথে। সঙ্গে গান,কবিতা নিয়ে।
সোনারপুর মোড়ে বিকাল ৪টে তে পথসভা। থাকব গান,বক্তব্য, পোস্টার নিয়ে।
যাদবপুর ৮-বি তে পথসভা বিকেল ৩টে তে। আসুন নিজের বক্তব্য রাখুন। আমরা থাকছি গান,কবিতা, বক্তব্য নিয়ে।
কোনো রাজনৈতিক দল নয়, বহু স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বহু মত সমৃদ্ধ পড়ুয়ারা উপরিউক্ত জায়গাগুলিতে আজ রবিবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসে জড়ো হচ্ছি নিজেদের মতো করে। যেমন বহু জানা-অজানা কথা সকলের সাথে ভাগ করে নিতে, তেমনি বহু জানা-অজানা প্রশ্নের উত্তর খোঁজা একসাথে শুরু করতেও। পারলে তুই,তুমি,আপনি ও আয়/এসো/আসুন নিজের সুবিধামত জায়গায়।
না সম্ভব হলে জড়ো হন নিজেদের জায়গায়, নিজেদের মতো করে, নিজেদের মতামত-অনুভূতি-অনুসন্ধিৎসা নিয়ে। আজকের পরিবেশ দিবস একদিনের অনুষ্ঠান না হয়ে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য-স্বপ্ন নিয়ে ছড়িয়ে যাক আগামীর গতিময়তায়...
একটি প্রকৃত ‘মানবিক’ পৃথিবীর জন্য
৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে কি বক্তব্য নিয়ে আমরা দিনটা পালন করবো তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলাম। কথায় কথায় নানা মতামত উঠে এলো। শেষে সকলে মিলে ঠিক করলাম, যারা আমাদের পোস্টার দেখবেন কবিতা-গানবাজনা-বক্তব্য শুনবেন কেউ কেউ হয়তো যোগও দেবেন, দেখি তো সেই অচেনা মানুষরা কি ভাবছেন! তাঁরা আদৌ এই নিয়ে উৎসাহী কিনা; এই জাতীয় পরিবেশ দিবস-টিবস পালন করাকে তাঁরা কি চোখে দেখেন!
পরিবেশ দিবসের আগের কয়েকটা দিন নানা পেশায় যুক্ত নানা বয়সের মানুষের সাথে কথা ব’লে, গল্প ক’রে আমাদের যা অভিজ্ঞতা হলো সেটাই আপনাদের সাথে ভাগ করে নেওয়া যাক।
দেখা গেল, বছরে একটা দিন পরিবেশ দিবস পালন করে আদৌ কিছু সুরাহা হবে এটা প্রায় কেউই মনে করেন না। অনেক অনেক ঘটনা-তথ্য আদৌ বেশিরভাগের মনে থাকে না। মোদ্দায় প্রায় সকলেই ধরে নিয়েছেন গোটা ব্যাপারটা খুব খারাপ দিকে যাচ্ছে। ভূমিকম্প বেড়ে গিয়ে অনেক এলাকা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, ২০/৩০ বছর বাদে কলকাতা জলের তলায় চলে যেতে পারে, পৃথিবী আরও গরম হয়ে ক্যান্সার বা অন্য নানা কারণে বহু মানুষ মারাও যেতে পারেন।
সবাই খেয়াল করেছেন যেখানে-সেখানে ফ্ল্যাট গজিয়ে উল্টোপাল্টা পুকুর বুজিয়ে/গাছ কেটে পরিবেশের যে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, ব্যক্তিগত উদ্যোগে দু-একটা গাছ লাগিয়ে/প্লাস্টিক বর্জন ক’রে সেই ক্ষতির কিছুই পূরণ হবে না। আর ওসব ক্ষমতাবান বা পয়সাওয়ালা মানুষদের ব্যাপার! তাই ইচ্ছে থাকলেও আদার ব্যাপারী জাহাজ নিয়ে ব’লে লাভ কি! বরং এসি ব্যবহার করলে পরিবেশ আরও দূষিত হয় জেনেও প্রচন্ড দাবদাহ বা ঘামে-হাঁসফাঁস অবস্থায় সুযোগ পেলে এসি ব্যবহার থেকে নিজেকে আটকে রাখা যায় না।
মোদ্দা কথায়, সাধারণ মানুষের কি যে ঠিক করার আছে এই বিষয়ে... কি করলে সত্যি ‘কাজের কাজ’ হবে... তা আদৌ বুঝতে না পারায় এই বিষয়ে কোনো কিছু করতেই কেমন যেন একটা উদ্যমের অভাব! অথচ যাঁদের সাথে কথা হলো তাঁদের মধ্যে বেশ কিছুজন সমাজের জন্য কিছু করতে চান... লেখালিখি/নাটক-গান/মিছিল-মিটিং করেন। গত ৫/১০ বছরে আগের চেয়ে এসবের পরিমাণও বেড়েছে। কিন্তু প্রকৃতি-পরিবেশ নিয়ে বেশিরভাগই কেমন যেন একটু বিষণ্ণ, খানিক ওয়াকিবহাল হলেও কেমন যেন নিরুদ্যম!
অনেক ঘটনা-তথ্য না জেনেও এঁরা সকলেই যেন ধরে নিয়েছেন, এ এক অতিকায় বিপর্যয় যা ক্রমশ আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে। মরি বা বাঁচি, আমাদের হাতে কিছু নেই, তাই এই নিয়ে ভেবে লাভও নেই।
অবশ্য এমন কিছু বন্ধুও আছেন নানা জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে, যারা বেশ উজ্জ্বল চোখমুখ নিয়ে পরিবেশ-ধ্বংসের বিরুদ্ধে আন্দোলন থেকে বিপন্ন প্রাণী সংরক্ষণের জন্য প্রচার নিয়ে দৌড়োদৌড়ি করেন!
বলে নেওয়া ভালো, ভূমিকম্প-খরা/বন্যার বাড়াবাড়ি-সুনামি-জলবায়ু পরিবর্তন-গ্লোবাল ওয়ার্মিং... এসবকে ‘প্রকৃতির মার’ বলেছেন অনেকেই। কিন্তু এমন কাউকেই পাওয়া গেল না, (কথা খানিক গড়ালে) যারা এটা মানছেন না যে, ক্রমশ বেড়ে-ওঠা এইসব দুর্যোগে মানুষের ভালো মতোই ‘হাত’ আছে।
তাহলে করবোটা কি??
আচ্ছা, মানুষ কি প্রকৃতির বাইরে? মানুষ তো প্রকৃতিরই শ্রেষ্ঠ সন্তান। সব জীবই প্রকৃতিকে বদলাতে পারে কম, প্রকৃতির সাথে খাপ খাইয়ে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে বেশি। জীবন-বিজ্ঞান বা পরিবেশবিদ্যার
বইতে একেই বলা হয় ‘অভিযোজন’। আর প্রকৃতির প্রভাবে জীবের শরীরে ঘটা পরিবর্তনকে বলে ‘জৈব বিবর্তন’। এটাও বায়োলজি বইতে আছে।
মানুষ সেই উন্নততম জীব, যে নিজের শরীরে চোখে-পড়ার-মতো পরিবর্তন (অর্থাৎ ‘জৈব বিবর্তন’) ঘটতে প্রায় দেয়ই না, প্রকৃতিকেই বদলে দেয় বেশি। তাই মানুষের শরীর বদলাতে বদলাতে অন্য উন্নত জীব এসে গেল— এমনটা আর ঘটে নি।
কিন্তু এর মানে এটা হতে পারে না যে, এই ‘মানুষ’ প্রকৃতির অংশ নয়। তাই নিজেকে টিকিয়ে রেখেও প্রকৃতিকে নিজের প্রয়োজনে বদলাতে পারার যে ক্ষমতা মানবজাতির রয়েছে, যা দিয়ে সে মানবসমাজের ভালোভাবে বাঁচার জন্য নানা বন্দোবস্ত করেছে প্রকৃতি থেকে সম্পদ আহরণ ক’রে বা প্রকৃতির মধ্যে বিপুল পরিবর্তন ঘটিয়ে, সেই ক্ষমতাকে অপব্যবহার ক’রে যদি সে প্রকৃতিকেই ধ্বংস করে তবে তার নিজেকে ধ্বংস করার পথই প্রস্তুত করা হয়।
এই কথাগুলো না-বুঝে আজ আর আমাদের উপায় নেই।
অর্থাৎ প্রজাতি হিসেবে পৃথিবীর বুকে টিকে থাকতে গেলে মানুষকে আজ প্রকৃতি-পরিবেশকে রক্ষা করতেই হবে। কারণ, না-হলে প্রকৃতির অংশ মানবপ্রজাতি নিজেই বাঁচবে না। এই কথাটার বিরুদ্ধে গিয়ে অন্য কোনোভাবে মানবজাতির ভালোর জন্য যে কাজই আমরা করি না কেন, তাকে আজ আর ‘মানবিক’ বলা যায় কি?
গাছ কেটে হাইওয়ে চওড়া হলে গাড়ি চড়তে আমাদের সুবিধে হবে, কিন্তু না বাঁচলে গাড়ি চড়বো কি করে?
ধরা যাক, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানিয়ে বিদ্যুতের যোগান দিতে সুবিধে হবে, কিন্তু না বাঁচলে বিদ্যুৎ নিয়ে করবোটা কি? (পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানালে আদৌ ওরকম সুবিধে হবে কিনা সেটাও একবার ভেবে নিতে হবে)
পাহাড় ফাটিয়ে মার্কেট-মল-রাস্তা হলে আরাম বাড়বে, কিন্তু গণচিতা বা গণকবরে শুয়ে আমরা আরাম ভোগ করবো কি করে?
জিন বদলে বীজ তৈরি ক’রে সস্তায় ভালো দেখতে বেগুন আমরা খেতেই পারি, কিন্তু ক্যান্সার মহামারী হলে বেগুনপোড়াও মুখে রুচবে কি?...
... ইত্যাদি ইত্যাদি...
পরিবেশ দিবসে তাহলে এই প্রতিজ্ঞা করা যায় কি যে, অন্য কোনো ভোগ-আরাম-সুযোগ-সুবিধার চেয়েও আমরা দরকারী মনে করবো আমাদের বেঁচে-থাকাকে? আর সেই জন্যই যে সুবিধার গল্পই আমাদের সামনে তুলে ধরা হোক-না-কেন, প্রতিবাদ করবো সেই সুবিধা বা প্রলোভনের বিরুদ্ধেও, যা প্রকৃতি-পরিবেশকে ধ্বংসের পথে একটু একটু ক’রে এগিয়ে দিয়ে আমাদের বেঁচে-থাকাটাকেই অনিশ্চিত করে দেয়?
আসুন কথা বলি, লেখা লিখি, ছবি আঁকি, জড়ো হই...
আমাদের সাথে আর যদি আপনার দেখা নাও হয়, জড়ো হন যে-যার-জায়গায় নিজেদের মতো ক’রে...
একা একা এই মৃত্যু-আতঙ্কের প্রহরকে অতিক্রম করা যাবে না...
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সায়ন (৯০৯৩৭৬৯৮৯১), সৌম্য (৮৯৬৭৭৫৬০৯৯), রণিত (৮৯৬১১২৫১৫২), স্নেহা (৭২৭৮৮৬৯৩০০), শুভম (৮১১৬৫৬০২৮২), কর্তৃক প্রকাশিত এবং অধিরথ (৯৮৩০৪৩২৫৫৯), সাগ্নিক (৮২৮২৮২৮০৬৪), সায়ন (৯৮৫১৭৮০৮০২), তোর্সা (৮৯৬১৫৮০২৯০), মৃলাঙ্ক (৯৮০৪৭১৯১২৯) কর্তৃক প্রচারিত


No comments:

Post a Comment