Nagraj Chandal
রাধা কলঙ্কিনী হইলে ক্ষতি কী!!রাধা কোন রক্তে মাংসের নারী হইলে বা কোন ঐতিহাসিক চরিত্র হইলে নিশ্চয়ই মনোবিজ্ঞানে “রাধা কমপ্লেক্স” নিয়া একটা চ্যাপ্টার খোলা হইত। ইদিপাস কমপ্লেক্সের নিয়া ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে ভারতীয় মাইথলজিতে। জোকাস্তা কমপ্লেক্সেরও অভাব নাই। অভাব নাই আন্তিগোনে কমপ্লেক্সেরও। এগুলোকে জৈবতাড়না কইতে পারেন। কিন্তু এই সব জটিল জৈবতাড়নার সমাজে নিন্দিত হইছে এবং চরিত্রগুলি পরিণতিতে ট্রাজিক হইয়া দাড়াইছে। মোদ্দাকতা ইয়োরোপের মাটিতেও পরবর্তী কালে এইসব জৈবতাড়নার শেকড় গাড়তে পারে নাই। কিন্তু ভারতের মাটিতে রাধা কৃষ্ণের রসালো আখ্যানের মধ্য দিয়া এই জৈবতাড়না এক দুর্লভ মোহ বিস্তার করতি সক্ষম হইছে। কত কবি কত বিনিদ্র রাইত জাইগ্যা রাধার বিরহে কাতর হইয়া তাঁকে এমন লোভনীয় নারী মূরতি বানাইছে যে অর কতা শুনলেই পিরিত নামের উড়ো পাখী বুকের মধ্যি পাখা ঝাপ্টাইতে থাকে। মনটা উথাল পাথাল হয়। দিকবিদিক সব গোলাইয়া যায়। নাবালক, সাবালক, বুড়োবুড়ি, ছোড়াছুঁড়ি সব একাকার হইয়া যায়। হিতাহিত, জ্ঞানগম্মি, কম্ম অকম্ম বুদ্ধিসুদ্ধি বেবাক লোপ পাইয়া গলাগলি, কোলাকুলি, হুড়োহুড়ি, গড়াগড়ি, জড়াজড়ি কইরা নামসুধা পান করার জন্যি বুদ হইয়া থাকে!
ভারতীয় কবিদের কী অমর কিত্তী! পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যে জৈবতাড়নাকে অশ্লীল অসামাজিক বইলা বাকি দ্যাশগুলি ছুইড়া ফেলাইছে তারেই সযত্নে চাষ কইরা, গাছ পুইত্যা, ফসল ফলাইয়া বংশপরম্পরায় খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতি পারছে!
গড় করি এইসব কবিদের যারা নারী মাত্রেই রাধা জ্ঞান করেন। মাইয়াগুলাকে রাধাপ্রেম জালে ফাঁসাইয়া উপপত্নীর সংখ্যা বাড়াতি পারেন। রাধা বা উপপত্নীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাইলে দেবালয়ের কাছে প্রমোদ কানন বানাইয়া ১৬শ গোপী সহযোগে রাসলীলায় মত্ত হইতে পারেন। পরকীয়া প্রেমে হাবুডুবু খাইতে পারেন! রাধার মনের ব্যাথাকে নারীত্বের প্রতিবাদ হিসাবে ব্যক্ত কইরা আরো রাধাকে দলে টানতি পারেন। রাধা কলঙ্কিনী হইলে কবিদের লাভ। বাবুদের লাভ। পরকীয়া প্রেমীদের লাভ। তাই কবিদের কতা ভাইব্যা, বাবুদের কতা ভাইব্যা, প্রেমিকদের কতা ভাইব্যা রাধা কলঙ্কিনী হইলে ক্ষতি কী!!

No comments:
Post a Comment