Subhadeep Swapno Niye
তাদের অপরাধ তারা রহিতের মৃত্যুর সঠিক বিচারের দাবীতে, দোষীদের শাস্তির দাবীতে, আপ্পা রাও এর পদত্যাগের দাবীতে লড়ে যাওয়া ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, ছাত্রছাত্রীদের সাথে গলা মিলিয়ে স্লোগান তুলেছিলেন, রহিত হাম শারমিন্দা হ্যায়, তেরে কাতিল জিন্দা হ্যায়। ব্যাস, ওই দুই শিক্ষক চক্ষুশূল হয়ে গিয়েছিল আপ্পা রাও এর।
২০১৫ এর আগস্টে ASA এর 'মুজ্জফরনগর বাকী হ্যায়' এর স্ক্রিনিং ঘিরে বিতর্ক থেকে শুরু করে রহিত ভেমুলার খুন হওয়া এবং তারপর দেশ জুড়ে দ্রুত আন্দোলন ছড়িয়ে পড়া - এসব আজ আর কারো অজানা নেই (https://www.facebook.com/photo.php?fbid=1003332669738096&set=pb.100001841171811.-2207520000.1465836955.&type=3&theater)। তাই সরাসরি চলে যাবো, ২২ মার্চের ঘটনায়, সেদিন আপ্পা রাও এর পুনরায় ক্যাম্পাসে ঢোকা কে কেন্দ্র করে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে জমতে থাকা ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। সহ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবীতে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন তীব্র রূপ নেয়, বহু ছাত্রছাত্রী ভিসির ঘরে ব্যাপক ভাংচুর চালায় বলে অভিযোগ আসে। এরপরেই ভিসি পুলিশ ডেকে, ১৪৪ ধারা জারী করার সম্মতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বেরিয়ে যায়। এরপরই শুরু হয় ছাত্রছাত্রীদের ওপর সেই সাঙ্ঘাতিক রাষ্ট্রীয় বর্বরতা---- বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট বন্ধ করে দিয়ে, বাইরে থেকে কাওকে ঢুকতে না দিয়ে (এমনকি মিডিয়াকেও), বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের জল, আলো, ওয়াইফাই বন্ধ করে দিয়ে, ছাত্রছাত্রীদের ওপর চলে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন। রান্নাঘর পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়। কয়েকজন ছাত্রছাত্রী অন্যত্র রান্না করার চেষ্টা করলে তাদের পুলিশ বেধড়ক মারধর করে, এক ছাত্রকে হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়। এভাবেই লড়াই, আন্দোলন দমানোর চেষ্টা চলে জোরকদমে। এরপরেই শোনা যায়, রহিত ভেমুলা'র হত্যার বিচারের দাবীতে আন্দোলন করা ছাত্রছাত্রীরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই অবস্থান করছিলেন সহ-উপাচার্যের ঘরের সামনে, এমন সময় ইচ্ছাক্রিতভাবে ABVP 'র কিছু গুন্ডা এসে ভাঙচুর চালায় এবং আগে থেকে প্রস্তুত থাকা পুলিশ শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের মারধোর শুরু করে, planned way তে।
ঠিক এই সময়েই ক্যাম্পাসে vandalism ও আপ্পা রাও কে পাথর ছোঁড়ার স্রেফ ভুয়ো অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় দুই প্রোফেসর কে.ওয়াই রত্নাম ও তথাগত সেনগুপ্ত কে।
এবং প্ল্যানমাফিক ৪৮ ঘণ্টার অধিক সময় জেলে বন্দি করে রাখা হয়, অভিযোগের কোনরূপ সত্যতা যাচাই ছাড়াই। ব্যাস, প্রোফেসরদের কে তাড়ানোর অস্ত্র পেয়ে যায় আপ্পা রাও, কেননা সংবিধানে কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিস সংক্রান্ত আইনের ১৪ নং ধারায় বলা আছে, কোন সরকারি কর্মী ৪৮ ঘণ্টার থেকে বেশী সময় পুলিশি হেফাজতে থাকলে তাকে সাসপেন্ড করা যেতে পারে (“A government servant shall be deemed to have been placed under suspension by an order of the appointing authority with effect from the date of his detention, if he is detained in custody, whether on criminal charge or otherwise, for a period exceeding 48-hours”)।
এপ্রিলের শুরু থেকেই জল্পনা চলছিল এই নিয়ে, আজ সে জল্পনার অবসান ঘটলো। জল্লাদ ভিসি নিজেই সাসপেনশন্ নোটিস জারি করেছে ওদের ওপর।
একদিকে দুই শিক্ষক যাদের মেরুদণ্ড এই বিকিয়ে যাওয়ার দিনেও ভীষণ রকমের সোজা, তারা ভারতের সংস্কৃতির গভীরে থাকা জাতিগত বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করা ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ান, তাদেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রহিত ভেমুলার হত্যাকারীদের শাস্তির দাবীতে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার বদ্ধ হন আর একদিকে আপ্পা রাও, যে সহ-উপাচার্য ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকিয়ে তারই ছাত্রছাত্রীদের ওপর অত্যাচার চালায়, এমনকি ছাত্রছাত্রীদের পিছনে র্যাফ লেলিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠিত হয় না।
সাথী, এটা পক্ষ নেওয়ার সময়। আড়ালে আড়ালে চলা লড়াইটা আজ এক্কেবারে সামনাসামনি এসে দাঁড়িয়েছে, মাঝখানে কিচ্ছুটি নেই।
এই অনাচারের তীব্র ধিক্কার জানাই।
প্রোফেসর তথাগত সেনগুপ্ত এবং প্রোফেসর রত্নাম এর সাসপেন্ড অর্ডার তুলে নেওয়ার দাবী জানাই।
#stand_with_hcu
#fight_back_hcu
No comments:
Post a Comment